সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট্ট ছেলেটার গলা ও তলপেটে ব্যথা। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের রং হলুদ। ত্বকেও কেমন বিবর্ণ হলদে ভাব। চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তাররা ধরেই নিয়েছিলেন জন্ডিস হয়েছে আক্রান্ত ১২ বছরের ছেলেটির। কিন্তু এরপরই তাঁদের চোখ পড়ে তার জিভের দিকে। দেখা যায় জিভের রং টকটকে হলুদ (Yellow tongue)! যা দেখে বিস্মিত হয়ে যান তাঁরা। এরপরই জানা যায়, বিরল এক অসুখে (Rare disorder) ভুগছে ছেলেটি।
‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে এমনই এক ঘটনার কথা। টরন্টোর (Toronto) এক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিল ছেলেটি। প্রাথমিক ভাবে জন্ডিস হিসেবে ধরে নেওয়া হলেও অচিরেই চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন ছেলেটি আক্রান্ত হয়েছে অ্যানিমিয়ায়। তার শরীরে সংক্রমণ ঘটিয়েছে EpsteinBarr virus। সাধারণত ছোটদেরই আক্রমণ করে এই ভাইরাসটি। আর তার ধাক্কাতেই ছেলেটি অ্যানিমিয়া ছাড়াও আক্রান্ত হয়েছে বিরল অসুখে। সেই অসুখের নাম ‘অ্যাগ্লুটিনিন’।
ঠিক কী হয় এই অসুখে? মহাভারতে এক অস্ত্রের বর্ণনা রয়েছে, যার নাম ত্বাষ্ট্র। যেটির প্রয়োগে নিজের দলের সৈন্যকেই আক্রমণ করেন কোনও ব্যক্তি। এই রোগের ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটে। নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই হয়ে ওঠে ‘ভিলেন’। যা ধ্বংস করতে শুরু করে রক্তের লোহিত কণিকাকে। সাধারণত শীতের দেশে এই অসুখের প্রকোপ বেশি।
যেহেতু রক্তের লোহিত কণিকা কমে যায়, তাই শরীরে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে শরীরে জন্ডিসের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তবে আশার কথা, চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছে ছেলেটির শরীর। তার শরীরে রক্ত দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রয়োগ করা হয়েছে স্টেরয়েড। প্রায় ৭ সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলার পর এখন তার জিভ আবার ফিরে পেয়েছে চেনা রং। সে নিজেও অনেকটাই সুস্থ। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ডাক্তাররা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.