সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইরে বেরলে জলের বোতল কিনে কয়েক চুমুকে শেষ করেই ফেলে দেওয়া। এটাই দস্তুর। আর প্লাস্টিকের বোতলের স্তূপ পরিবেশ দূষিত করে চলে। এই কাজে বিরাম নেই। এদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের চোখ রাঙানি যে পরিবেশ দূষিত হয়ে চলেছে, সেদিকে খেয়াল নেই কারও।
একটু ভুল বলা হল। খেয়াল আছে কারও কারও। তাই তাঁরা বিকল্প পথের সন্ধান করেছেন। অসমের বাসিন্দা ধৃতিমান বোরা বলছেন, ”ফেলে দিন প্লাস্টিকের বোতল। বাঁশের বোতল ব্যবহার করুন, বারবার ব্যবহার করুন। ফেলতে হবে না, দূষণও ছড়াবে না।” তাঁর কাজে সাহায্য করেছেন মৌসুম বোরা। এখন তাঁদের লক্ষ্য, এই বাঁশের বোতলকে জনপ্রিয় করে প্লাস্টিকের একেবারে বন্ধ করে দেওয়া।
বাঁশ চেঁচে বোতল তৈরি করা হয়ত সহজ। প্রাক্তন আইআইটি পড়ুয়া ধৃতিমান বোরা সেই বোতলে ছিপিও লাগিয়ে দিয়েছেন। একেকটি বোতলের মাপ অনুযায়ী ছিপি তৈরি করেছেন ধৃতিমান, মৌসুম। ফলে নিশ্চিন্তে বোতল ব্যবহার করতে পারেন যে কেউ। একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়ারও বাধ্যবাধকতা নেই। আর বাঁশ দিয়ে তৈরি হওয়ায় তাতে জল ঠান্ডা এবং পরিষ্কার থাকবে, কোনও সংক্রমণের ভয় নেই।
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানাচ্ছেন, ”গরমকালে প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা একেবারেই নিরাপদ নয়। গরমে গলনের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। আর বাঁশের বোতল প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়ায় এতে জল নেওয়া স্বাস্থ্যকর।” মৌসুম বোরার কথায়, ”প্রকৃতি থেকে উপলব্ধ সমস্ত সামগ্রীকে আমি নতুন করে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। দেখুন, এমন অনেক জিনিসই আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। আমরা ততটা খেয়াল করি না। আমাদের লক্ষ্য, আশেপাশে পড়ে থাকা প্রাকৃতিক জিনিসের দিকে সকলের নজর ফেরানো।”
ধৃতিমান-মৌসুমের তৈরি নতুন বোতল দাম একটু বেশিই। আকার অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ করলে মিলবে একেকটি বাঁশের বোতল। www.tribalplantes.com-এর মাধ্যমে আপাতত এই পরিবেশবান্ধব বোতলের বিকিকিনি চলছে। তা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে চাইছেন নির্মাতারা। এমন দিন হয়ত অদূর ভবিষ্যতেই আসবে যে হাতে হাতে ঘুরবে প্লাস্টিকের নয়, বাঁশের বোতল। কিন্তু তার জন্য আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা। কারণ, এমন বোতল যে আছে, সেকথা জানেনই না অসমের বহু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.