অর্ণব আইচ: ক্রমাগত তাপ ছড়াচ্ছে যন্ত্রটি। আর সেই তাপেই ক্রমে নষ্ট হচ্ছে করোনা ভাইরাসের আরএনএ। এভাবে এবার করোনা বিনাশে নেমেছে ‘অতুল্য’। এই নামেই তাকে ডাকতে শুরু করেছেন বৈজ্ঞানিকরা। ওজন তিন কিলোর মধ্যে, এমন যে কোনও বস্তুর গায়ে যদি করোনা ভাইরাসের চিহ্নটুকুও থাকে, তবে ‘অতুল্য’ তা লোপ করতে প্রস্তুত। আসলে এটি একটি ‘মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার’। এই যন্ত্রেই সে করোনা ভাইরাস শেষ হচ্ছে, সেই প্রমাণ ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন। এবার সাধারণ মানুষ যাতে কম দামে ‘অতুল্য’কে ব্যবহার করতে পারেন, সেই উদ্যোগ নিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
‘অতুল্য’ তৈরির পুরো কৃতিত্ব ডিফেন্স ইন্সটিটিউট অফ অ্যাডভানসড টেকনোলজির। পুণের এই সংস্থাটি ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও’র আওতায় পড়ে। কিছুদিন আগেই ডিআরডিও করোনা ভাইরাস নষ্ট করার জন্য একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছিল। ওই যন্ত্রটি থেকে অতিবেগুনি রশ্মি বের হয়। ওই রশ্মিই কিছুক্ষণের মধ্যে কাবু করে ফেলে করোনা ভাইরাস। নষ্ট করে ফেলে তার ডিএনএ ও আরএনএ। ওই যন্ত্রের মধ্যে রাখা মোবাইল, ফাইল বা টুপির মতো হালকা বস্তুতে থাকা করোনা ভাইরাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ওই যন্ত্রটি তৈরির সঙ্গে সঙ্গে বৈজ্ঞানিকরা এমন কোনও যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেন, যাতে বিনাশ হবে আরও বেশি ওজনের বস্তুর উপর লেগে থাকা করোনা ভাইরাস। কিন্তু এই ক্ষেত্রে অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রাভায়োলেট রে’র বদলে তাপকেই ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই ডিফেন্স ইন্সটিটিউট অফ অ্যাডভানসড টেকনোলজি তৈরি করেছে ‘মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার’টি।
দেশবাসীর ঘরে ঘরে রয়েছে মাইক্রোওয়েভ। খাবার গরম করতে এর ব্যবহার অতুলনীয়। আবার অনেকে শিশুদের দুধের বোতল বা অন্য বস্তু গরম করতে মাইক্রোওয়েভ স্টেরিলাইজার ব্যবহার করেন। বিদেশে কুড়ি ডলারের মধ্যেও পাওয়া যায় এই ধরনের যন্ত্র। কিন্তু ‘অতুল্য’কে তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে ভারী বস্তুও তাপের মাধ্যমে স্টেরিলাইজ করা যায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বৈজ্ঞানিকরা জানাচ্ছেন, এই যন্ত্রের সামনের অংশটি অনেকটা চোঙের মতো। ওই চোঙের ভিতর দিয়ে তিন কিলো ওজনের মধ্যে থাকা যে কোনও বস্তু যন্ত্রের ভিতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যন্ত্রটি চালু করা হলে এক মিনিট ধরে ৫৬ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তাপপ্রবাহ ক্রমাগত বস্তুটির উপর ছড়াতে শুরু করে। ক্রমাগত ছড়ানো এই তাপ সহ্য করতে পারে না করোনা ভাইরাস। বিনষ্ট হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, এই যন্ত্রটি বহনযোগ্য। ঘর ও অফিস যে কোনও জায়গায় ব্যবহার করা যায়। যাতে কম দামে সাধারণ মানুষ যন্ত্রটি কিনতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.