সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর বুকে উষ্ণায়নের (Global Warming) অভিশাপ লেগেছে বহুদিন আগেই। প্রকৃতির রোষ আছড়ে পড়েছে বারবারই। তাতে সাবধান হওয়ার বদলে তাকে গুরুত্বহীন করেই আমরা দিন কাটিয়েছি। কিন্তু আর কত? বিপর্যয়ের সঙ্গে আর কতটা যুঝলে আমরা নিজেদের সচেতন করতে পারব, এই প্রশ্ন উঠছেই। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, উষ্ণায়ন এতটা থাবা বসিয়েছে যে উত্তর মেরুর শীতলতম শহর, রাশিয়ার ভেরখোয়ানস্ক পুড়ছে দাবদাহে! গত সপ্তাহান্তে সেখানে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়ে ফেলেছিল ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, যা আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার কাছাকাছি।
মস্কো থেকে প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার দূরে ভেরখোয়ানস্ক (Verkhoyansk) শহর। সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অন্যতম শীতল শহর এটি। মাত্র ১৩০০ বাসিন্দার বসবাস। এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড খতিয়ে দেখে আবহাওয়াবিদদের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি মাসে সেখানকার তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, জুনে সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ ডিগ্রিতে। আর সম্প্রতি ৩০ এর কোঠা পেরিয়ে একেবারে ৩৮ ডিগ্রি।
উষ্ণতার এই মাত্রাতিরিক্ত হেরফের নিয়ে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড্যান মিশেল বলছেন, “বছর বছর উষ্ণতাবৃদ্ধিতে নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। কিন্তু মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা পৃথিবীর অন্য যে কোনও অঞ্চলের তুলনায় লাগামছাড়াভাবে বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও অনেক অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য আমরা তৈরি।”
এই ভেরখোয়ানস্ক শহর থেকে খুব বেশি দূরে নয় নরিলস্ক। সপ্তাহ কয়েক আগে এখানে ডিজেল ভরতি ট্যাঙ্কার ফুটো হয়ে সাদা বরফের চাদরের উপর ছড়িয়ে পড়েছিল। বিক্রিয়ায় রক্তাভ হয়ে গিয়েছিল তুষারশুভ্র নদীও। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন পর্যন্ত তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে বিজ্ঞানীরা ওই এলাকা পরিদর্শন করে বুঝতে পারেন, ডিজেল ছড়িয়ে পড়ায় ভূগর্ভের হিমায়িত অঞ্চলের উষ্ণতা বেড়েছে অনেকটা। যা সুমেরুর পরিবেশকে বিঘ্নিত করেছে। শীতল পরিবেশ একধাক্কায় উষ্ণ হয়েছে। এই আবহাওয়া ভেরখোয়ানস্কের মতো সাইবেরিয়ান অঞ্চলের বাসিন্দাদের একেবারেই অচেনা। ফলত এই গরমে তাঁরা দগ্ধ হচ্ছেন। ভাবতে হচ্ছে অন্যরকমভাবে জীবনযাপনের কথা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.