সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (Reliance Industries) এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন (Reliance Foundation) সোমবার ‘বনতারা’ (Vantara) প্রকল্প ঘোষণা করেছে। ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের আহত, অসুস্থ এবং বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের উদ্ধার করে চিকিৎসা এবং যত্ন সহকারে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে এই প্রকল্পের অধিনে। সমগ্র প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন সংস্থার অন্যতম কর্নধার অনন্ত আম্বানি
গুজরাটের (Gujarat) জামনগর রিলায়েন্সের রিফাইনারি কমপ্লেক্সের গ্রিন বেল্টের মধ্যে ৩ হাজার একর জমিতে ক্রমশ গড়ে উঠছে ‘বনতারা’র স্বপ্ন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো বন্যপ্রাণীদের স্বার্থে গোটা এলাকাটিকে গভীর জঙ্গলের মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। যা ভবিষ্যতে বিশ্বের বৃহত্তম বন্যপ্রাণ পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বনতারা মিশনের লক্ষ্য হল আধুনিক প্রাণী সংরক্ষণ। যেখানে থাকবে প্রাণীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা। এছাড়াও প্রাণী গবেষণা কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। এই বিষয়ে ভাবনার আদানপ্রদানের জন্য ইন্টারন্যাশানাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড ফর নেচারের (WWF) মতো সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করছে রিলায়েন্স।
ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের অধীনে ২০০টির বেশি হাতি, কয়েক হাজার অন্যান্য প্রাণী, সরীসৃপ এবং পাখিকে উদ্ধার করা হয়েছে। গন্ডার, চিতাবাঘ এবং কুমিরেরও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে এই প্রকল্পে। বিদেশে মেক্সিকো এবং ভেনিজুয়েলার মতো দেশে প্রাণী কল্যাণে কাজ করছে বনতারা।
জামনগরে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি ‘হাতি কেন্দ্র’ও। সেখানে হাইড্রোথেরাপি পুল, ওয়াটার বডি এবং হাতির বাতের চিকিৎসার জন্য একটি জাকুজিও থাকবে। ৫০০ জন প্রশিক্ষিত কর্মী হাতিদের দেখভাল করবেন। ২৫ হাজার বর্গফুট এলাকায় একটি হাসপাতালও থাকছে। যেখানে হাতির অস্ত্রোপচারও করা যাবে। এলিফ্যান্ট সেন্টারে ১৪ হাজার বর্গফুটের একটি রান্নাঘরও থাকবে। এই কেন্দ্রে আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও হবে।
এছাড়াও বনতারা প্রকল্পের আওতায় ৬৫০ একর জায়গায় একটি উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রও রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ আহত চিতাবাঘকে উদ্ধার করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি কুমিরকেও রক্ষা করা হয়েছে। ভারতের তামিলনাড়ু, আফ্রিকা, স্লোভাকিয়া ও মেক্সিকো থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। সার্কাস ও চিড়িয়াখানা থেকে আনা প্রাণীদেরও রাখা হবে এখানে। প্রাণীদের যত্ন কাজ করছেন ২১০০ জনেরও বেশি কর্মী। এই কেন্দ্রে রয়েছে ১ লাখ বর্গফুটের একটি হাসপাতাল এবং চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র। যেখানে মানুষের মতোই প্রাণীদের জন্যও যাবতীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে।
বন্যপ্রাণ প্রেমী হিসেবে পরিচিত RIL ও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর অনন্ত অম্বানি। জামনগরে রিলায়েন্সের রিনিউয়েবল এনার্জি ব্যবসার নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি। ২০৩৫ সালের মধ্যে নেট কার্বন জিরো স্ট্যাটাস অর্জনের কোম্পানির লক্ষ্যের দিকে কাজ করছেন৷ স্বপ্নের প্রকল্প বনতারার বিষয়ে অনন্ত বলেন, ‘ছোট থেকেই এই বিষয়ে প্যাশন ছিল, এখন যা মিশনে পরিবর্তিত হয়েছে।’ টিম বনতারা ভালো কাজ করছে বলেই মিশনে সফাল্য আসছে, দাবি রিলায়েন্স কর্তার।
আরও বলেন, ‘আমরা দেশের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর সুরক্ষার দিকে নজর দিচ্ছি। আমাদের কাছে খুশির খবর হল, দেশ-বিদেশে স্বীকৃতি ও সুনাম অর্জন করছে আমাদের এই উদ্যোগ।’ অনন্ত জানান, বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে দেশ-বিদেশের সেরা প্রাণী ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ বনতারা মিশনের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.