সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মহামারীর (Covid Pandemic) প্রকোপ থেকে এখনও নিস্তার মেলেনি। এরই মধ্যে আরেক মহামারীর পূর্বাভাস দিয়ে রাখলেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই মহামারী কোনও বাদুড় বা পাখি থেকে আসবে না। আসবে হিমবাহের (Glacier) গলন থেকে।
এমনটাই সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের। তাঁদের হুঁশিয়ারি, পরবর্তী ভাইরাস-জনিত মহামারীর উৎস হতে পারে হিমবাহের গলন (Melting of Glaciers)। কীভাবে? নতুন গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা–অতিরিক্ত হারে বরফ গলনের ফলে তাতে নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। থাকে ভাইরাসের নতুন ‘হোস্ট’ খুঁজে নিয়ে, তাকে সংক্রামিত করার প্রবণতা। বৈজ্ঞানিকভাবে একে বলা হয় ‘ভাইরাল স্পিলওভার’ (Viral Spillover)। অর্থাৎ এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে নতুন ‘হোস্ট’ খুঁজে নিয়ে কোনও ভাইরাস সেটিতে সংক্রামিত হতে পারে এবং তার দ্বারা পরবর্তীতে অন্য ‘হোস্ট’কেও সংক্রামিত করতে পারে। বিজ্ঞানীদের দাবি, যে হারে হিমবাহ গলছে, তাতে জমা জলের সঙ্গে এসে মিশছে প্রচুর ভাইরাস এবং ব্যাকটিরিয়া। সেই জল সেবন করে বন্যপ্রাণীরা যেমন সংক্রামিত হতে পারে, তেমনই তাদের মাধ্যমে মানুষেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঠিক যেমনভাবে কোভিড সংক্রমণের নেপথ্যে রয়েছে বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার তত্ত্ব। বিজ্ঞানীদের যে দলটি এই দাবি করেছে, তাঁরা বিশ্বের বৃহত্তম ‘হাই আর্কটিক’ মিষ্টি জলের হ্রদ ‘লেক হ্যাজেন’ (Lake Hazen) থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসিডিংস অফ দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি : বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’ নামের জার্নালে।
২০১৬ সালে উত্তর সাইবেরিয়ায় অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এতে এক শিশু মারা যায় এবং সাতজন আক্রান্ত হয়। তাপমাত্রার প্রভাবে পারমাফ্রস্ট গলে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগটি ছড়ায় বলে দাবি করে আসছে বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, হিমবাহে আটকে থাকা ভাইরাস মানব সমাজের জন্য কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ তা জনতেই বর্তমান গবেষণাটি চালিয়েছে কানাডার (Canada) অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিফেন অ্যারিস ও তার সহকর্মীরা। সব মিলিয়ে নয়া মহামারীর রক্তচক্ষু নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.