সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের গ্রেটা থুনবাগ সাত বছর বয়সী এই কাশ্মীরী কিশোরী! মাত্র ৭ বছর বয়সে বিশ্বের কঠিন দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে সে। ২ বছর ধরে নিরলস প্রচেষ্টা করে বিখ্যাত ডাল লেক পরিস্কার করার কাজ করে চলেছে সে। এবার তার গল্প জানা যাবে হায়দরাবাদের (Hydrabad) পাঠ্যবইতে।
বয়স মাত্র ৭, অথচ চোখে হাজার তারার স্বপ্ন। যেই বয়সে কিশোরেরা বিশ্বকে চিনতেই দিনের অর্ধেকটা কাটিয়ে দেয়, সেই বয়সে বিশ্বকে গড়ার শিক্ষা দিচ্ছে এক কাশ্মীরী কিশোরী, জন্নত। শ্রীনগরের (Srinagar) প্রাণ ভোমরা ডাললেকের স্বচ্ছতা বজায় রাখার কাজে যুক্ত এই কিশোরী। টানা ২ বছর ধরে এই লেককে স্বচ্ছ রাখতে নিরলস পরিশ্রম করেছে ছোট্ট জন্নত। ২০১৮ সালে কিশোরীর বাবা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন। সেখানেই দেখা যায়, কীভাবে ছোট্ট জন্নত একটা শিকারায় চেপে শ্রীনগরের দূষিত ডাললেককে পরিস্কার ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সেই ভিডিওতেই জন্নত জানিয়েছিল, “আমি আর আমার বাবা লেককে পরিস্কার রাখার একটু প্রচেষ্টা করলাম। আমরা সেখান থেকে প্রচুর নোংরা আবর্জনা উদ্ধার করলাম। কিন্তু এইটুকুতেই ডাললেক পরিস্কার হওয়ার নয়। ডাল লেক আমাদের সম্পদ। আর এই কাজে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং লেকের সৌন্দর্য যাতে ফিকে না হয়ে যায় তারজন্য সবটাই উজাড় করে দিতে হবে।”
সেদিনের সেই ছোট্ট জন্নতের বার্তা শুধু কথার কথাই হয়ে হারিয়ে যায়নি। তার বলা কথাগুলো মনে দাগ কেটেছিল দেশবাসীর। এই লেকের স্বচ্ছতার জন্য তার অবদান শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কন্ঠেও। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অন্যতম উদাহরণ হিসেবে দেশবাসীর কাছে প্রধানমন্ত্রী সেই ভিডিও তুলে ধরেছিলেন। তবে এখানেই জন্নতের প্রয়াসকে সম্মান জানানো থেমে থাকেনি। তার চেষ্ঠাকে কুর্নিশ জানাতে এবার হায়দরাবাদের পাঠ্যবইতে নাম উঠল কিশোরীর। সেই খবর পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেললেন জন্নতের পরিবার।
জন্নতের কথায়, “বাবার থেকেই লেক সংরক্ষণ করার কথা শুনেছি। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই এই কাজ শুরু করি। এই পুরো কৃতিত্বটাই বাবার।” তবে আজ মেয়ের জন্য যারপরনাই গর্বিত জন্নতের বাবা তারেক আহমেদ। কথা বলার সময় শুধু নিস্পলক চোখে চেয়ে ছিলেন মেয়ের হাসিমাখা মুখের দিকে। বোধহয় তখন শব্দের অভাব অনুভব করছিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.