সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকায় সরকারের সরবরাহ করা জলে মিলল বিরল প্রজাতির ‘মগজখেকো’ অ্যামিবার হদিশ। এর ফলে টেক্সাস প্রদেশের আটটি শহরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আমেরিকার স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ভয়ানক অ্যামিবা সন্ধান মেলার পরেই টেক্সাস কমিশন অন এনভায়রনমেন্টাল কোয়ালিটির তরফে আটটি শহরে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
যাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রাজোসপোর্ট ওয়াটার অথরিটি (Brazosport Water Authority)’র সরবরাহ করা জল যেন এখনও কেউ ব্যবহার না করে। কারণ, ওই তাদের সরবরাহ করা জলের মধ্যে নাইগ্লেরিয়া ফোলেরি (Naegleria fowleri) নামে একটি বিরল প্রজাতির অ্যামিবার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এককোষী ওই প্রাণীটি মানুষের শরীরে ঢুকে মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেয়। বিষয়টি সম্পর্কে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সূত্রে খবর, মগজখেকো (brain-eating) এই অ্যামিবা (amoeba)-টি নদী, পুকুর, হ্রদ বা সুইমিং পুল, যে কোনও জলে থাকে। উষ্ণ জল হলে তো কথাই নেই, দ্রুত বংশবৃদ্ধি বা কোষ বিভাজন করে অ্যামিবারা। সেই জন্য উষ্ণ প্রস্রবণগুলিতে এদের দেখা মেলে অনেক বেশি। শিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায়, দূষিত জলেও দেখা মেলে এদের। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করা সুইমিং পুল বা ক্লোরিনেটেড নয় এমন বদ্ধ জলে দ্রুত ছড়ায় এই ধরনের অ্যামিবা। খালি চোখে ধরা দেয় না মোটেও। এমনিতে তাকে নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, যদি নাক দিয়ে কোনও ভাবে শরীরে প্রবেশ করে, তাহলে মগজের দফারফা না করে সে ছাড়বে না। স্নায়ুকোষ ছিন্নভিন্ন করবে নিমেষে। শিশু হলে তৎক্ষণাৎ মৃত্যু, প্রাপ্তবয়স্ক হলে খানিকক্ষণ খাবি খেয়ে তারপর প্রয়াত হবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনওভাবে জলের মাধ্যমে এই অ্যামিবাকে গিলে ফেললে ততটা ক্ষতি হয় না। কিন্তু, নাক দিয়ে যদি শরীরে ঢোকে তাহলে এরা ভয়ানক রূপ ধারণ করে। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি ও পেশির খিঁচুনি দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়। দ্রুত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ড্রাগ না দিলে মস্তিষ্কের কোষ ছিঁড়ে খুঁড়ে দেয় এই এককোষী প্রাণীরা। এর ফলে প্রাথমিক অবস্থায় হালকা মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, জ্বর ও পেটব্যথা হয়। ১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়ার একটি হ্রদের জলে প্রথম এই মগজখেকো অ্যামিবার সন্ধান মিলেছিল। ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় ১৯৬২ সাল থেকে এই অ্যামিবায় এখন পর্যন্ত ১৪৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র চার জন বেঁচে ফিরতে পেরেছেন। ২০১২ সালে পাকিস্তানেও এই অ্যামিবার ফলে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.