Advertisement
Advertisement

Breaking News

70 year old man plants tree in many places in Purulia

ফাঁকা জায়গা দেখলেই বৃক্ষরোপণ, সত্তরেও সবুজ বিপ্লব ‘গাছ দাদু’র

চরম আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও গাছ লাগানোই নেশা তাঁর।

70 year old man plants tree in many places in Purulia । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 19, 2023 8:52 pm
  • Updated:July 19, 2023 8:52 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সেই ১২ বছর বয়স থেকে শুরু। আজ ৭০ ছুঁইছুঁইতেও একের পর এক গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। একেবারেই নিঃশব্দে। প্রচারের বাইরে থেকে। এখনও পর্যন্ত প্রায় হাজার দুয়েক গাছ লাগিয়ে অযোধ্যা পাহাড়তলিতে রীতিমতো উদাহরণ হয়ে রয়েছেন ‘গাছ দাদু’ দুখু মাঝি। এই বনমহোৎসবের মধ্যে তিনি যেন মডেল।

পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি ব্লকের অযোধ্যা পাহাড়তলির সিন্দরি গ্রামের বাসিন্দা দুখু মাঝি। যেখানে সেখানে বৃক্ষরোপণ করাটাই যেন তাঁর নেশা। আসলে সবুজের মধ্যে দিয়েই যে তাঁর বেড়ে ওঠা। কিন্তু হঠাৎ করেই অযোধ্যা পাহাড়ের জঙ্গল ক্রমশ সাফ হতে দেখে আঁতকে উঠেছেন তিনি। তাই শুধু নিজের বৃক্ষরোপণ করে যাওয়া নয়। এখন গাছ লাগানোর জন্য তিনি রীতিমত প্রচার করছেন। তিনি জানেন, গাছ না থাকলে এই পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে না। যেভাবে প্রতিদিন এই বসুন্ধরা উষ্ণ হচ্ছে।

Advertisement

বৃষ্টিপাত ক্রমশ কমে আসছে। তাতে বাঁচাটাই যেন কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই তাঁর বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে এই কাজে প্রচারাভিযানও চলছে। অতীতে তাঁকে এই কাজের জন্য বনদফতর সম্মানও জানিয়েছে। বাঘমুণ্ডি বনাঞ্চলের আধিকারিক শাহনাজ ফারুক আহমেদ বলেন, “১৯৮৮ সালের ফরেস্ট পলিসিতে রয়েছে ১৭ শতাংশ বনাঞ্চল এলাকা থাকলেও সেখান থেকে ৩৩ শতাংশে পৌঁছাতে হবে। আর এই কাজের জন্য বনাঞ্চলের বাইরে থাকা জমিতে গাছ লাগাতে হবে। আর সেই কাজে বড়সড় উদাহরণ এই দুখু মাঝি। তাঁকে আমরা কুর্নিশ জানাই।”

[আরও পড়ুন: রাজ কুন্দ্রার ‘পর্ন কাণ্ড’ এবার বলিউড সিনেপর্দায়, ‘নায়ক’ শিল্পা শেট্টির স্বামী নিজেই]

যেখানেই ফাঁকা দেখেন সেখানেই যেন একটা বৃক্ষরোপণ করে আসেন। তাই ওই বয়স্ক মানুষটিকে এলাকার মানুষ ‘গাছ দাদু’ বলে থাকেন। তাঁর কথায়, “লাক্ষা চাষের জন্য যেসব গাছের প্রয়োজন। সেই কূল, কুসুম গাছ রোপন করতে শুরু করি ১২ বছর বয়স থেকে। তারপর থেকে এই কাজ চলছেই। গাছ ছাড়া যে আমরা বাঁচবো না।” ‘গাছদাদু’ এই দীর্ঘ সময়ে বট, কূল, কুসুম, আম, জাম, পেয়ারা, কাঁঠাল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, কদম কত যে বৃক্ষরোপণ করেছেন তার হিসাব নেই। সিন্দরি এলাকায় তিনি নিজ হাতে গাছ লাগিয়ে আজও পরিচর্যা করে যান। বনদপ্তরের বনসৃজন প্রকল্পকে বাঁচাতেও তাঁর চেষ্টার শেষ নেই। রাস্তার পাশে লতাপাতা, বেড়া দিয়ে বনদপ্তরের কত গাছ যে বাঁচিয়ে দিয়েছেন তার হিসাব নেই।

কিন্তু এই বয়স্ক মানুষটির যে খুবই কষ্টের জীবন। স্ত্রী,দুই ছেলেকে নিয়ে কোনভাবে সংসার চলে। বড় ছেলে অবশ্য দিনমজুরি করে খানিকটা সংসার টানেন। আর তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা বলতে ‘গাছ দাদুর’ বার্ধক্য ভাতা। ব্যস, আর কিছু না। চরম আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি তাঁর গাছ লাগানোর নেশা থেকে সরে আসেননি। লেখাপড়া জানেন না। জানেন না সই-সাবুদ করতেও। কিন্তু জানেন, “একটি গাছ, একটি প্রাণ।” তাই অযোধ্যা পাহাড়তলিতে বৃক্ষরোপণের কর্মযজ্ঞ আরও প্রসারিত হচ্ছে এই ‘গাছ দাদু’র উদ্যোগেই।

[আরও পড়ুন: আতঙ্কের নাম WormGPT! চ্যাটজিপিটির ‘ক্লোন’ দিয়েই ফাঁদ পাতছে হ্যাকাররা!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement