সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যান্টিবায়োটিকের উদ্ভাবন চিকিৎসাবিজ্ঞানের যুগান্তকারী আবিষ্কারের অন্যতম। কিন্তু মুড়ি-মুড়কির মতো সেই ওষুধ খেয়ে চলাই কাল হতে চলেছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করলেও ভ্রূক্ষেপ করেননি কেউ। কেননা এর ফলে একশ্রেণির জীবাণু ক্রমেই ‘অবাধ্য’ হয়ে উঠছে। যার জেরে বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ। গবেষকরা দাবি করেছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণের কারণেই।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডোমিওলজিস্ট জোসেফ লিওনার্দ বলেছেন, ”আমরা নিজেদের কোথায় এনে ফেলেছি এটা আমাদের বুঝতে হবে।” ‘দ্য ল্যান্সেট’-এ প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৯৯০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই কারণে। আগামী সময়ে এর হার আরও বাড়বে। এবং ২০২৫ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে তা বার্ষিক ২০৪টি দেশের ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৩ কোটি ৯০ লক্ষের বেশি।
প্রসঙ্গত, অ্যান্টিবায়োটিক মূলত ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী। আর সেই কারণে তারা এমন ব্যাকটেরিয়াকেও ধ্বংস করে দেয়, যেগুলি শরীরের জন্য উপকারী। তাছাড়া এর রয়েছে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কিন্তু এর সবচেয়ে বড় বিপদ হল অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ বৃদ্ধি। গবেষকরা জানাচ্ছেন, পাঁচের কমবয়সিদের মধ্যে গত তিন দশকে তা বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। সত্তরোর্ধ্ব মানুষের ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৮০ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয়, পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সতর্ক করছেন গবেষকরা। নয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখানে প্রাপ্ত তথ্য থেকে আগামী দিনে ওষুধ তৈরি এবং নতুন টিকা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। এর জন্য বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ এবং স্বল্প আয়ের দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত এই বিষয়ে আলোচনা চালানো দরকার। তবে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.