সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কালীপ্রতিমার দিকে তাকালে দেবীর গলায় মুণ্ডমালা কিংবা তাঁর হাতে ধরা কাটা মুণ্ডের দিকে প্রথমেই নজর যায়। কী এই মুণ্ডমালার তাৎপর্য? মায়ের হাতে ধরা মুণ্ডটিই বা কার?
কালীপুজোয় পূজ্য প্রতিমা বিগ্রহের হাতে থাকে রক্তস্নাত খড়্গ। পায়ের নিচে শায়িত শিব। হাতে ধরা কাটা মাথাটি থেকে ঝরে পড়ছে রক্ত। সেই শোনিতপানে মত্ত এক শিয়াল। দেবীর গলায় ঝোলে মুণ্ডমালা। আপাত ভাবে এই দৃশ্যে ভক্তির সঙ্গে ভয়ের মিশেল থাকলেও মুণ্ডের তাৎপর্য কিন্তু কোনও ভীতি উদ্রেকের বিষয় নয়।
প্রাচীন কাল থেকেই কালীমূর্তিকে দেখা গিয়েছে মুণ্ডমালা ধারণ করতে। পাল যুগের প্রতিমা হোক কিংবা কালিদাসের বর্ণনা, কালীর গলায় ঝুলন্ত মুণ্ডমালার উল্লেখ শত শত বছর আগেও মেলে। মনে রাখতে হবে, এখানে মুণ্ডের সংখ্যা সব সময়ই নির্দিষ্ট। পঞ্চাশ। কেন পঞ্চাশ? আসলে এক একটি মুণ্ড বা করোটি একটি বর্ণের প্রতীক। বলাই হয় কালী পঞ্চাশৎ বর্ণময়ী। বাংলা বর্ণমালায় মোট বর্ণ ৫০টি। এদের মধ্যে স্বরবর্ণ ১১টি। ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯টি। ‘ব্রহ্মাণ্ড ছিল না যখন মুণ্ডমালা কোথায় পেলি’? এই শাক্ত উচ্চারণের নেপথ্যে আসলে রয়েছে এই কারণ। ব্রহ্মাণ্ডের আদি সেই মুহূর্তে নরকরোটি নয়, বর্ণকেই ধারণ করেন মা কালী।
কিন্তু তাঁর হাতে ধরা মাথাটি কার? এই নিয়েও একটি মত রয়েছে। সেই মত বলছে মুণ্ডমালা যুদ্ধের প্রতীক। আবার প্রতিটি মুণ্ড আসলে এক একটি শক্তিসাধনার প্রতীক, এমন মতও রয়েছে। এদিকে তাঁর হাতে ধরা মুণ্ডটিকে মোক্ষ ও চৈতন্যের প্রতীক বলেই ধরা হয়। আবার এমন মতও রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে রণক্ষেত্রে যুদ্ধরতা দেবীর কেশ আকর্ষণ করেছিলেন এক সেনাপতি। তাঁর মুণ্ড কর্তন করেন মা কালী। সেটিই শোভিত তাঁর মূর্তিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.