অভিরূপ দাস: পুণ্য অর্জন করতে আর পাড়ি দিতে হবে না জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu-Kashmir)। বেহালায় সাড়ে সাত বিঘা জমিতে সেজে উঠেছে বৈষ্ণোদেবীর মন্দির (Vaishno Devi)। আগামী ১৮ জানুয়ারি আমজনতার জন্য খুলে যাবে তিলোত্তমার বৈষ্ণোদেবীর দ্বার। উদ্বোধনে হাজির থাকবেন দেশের একাধিক মন্দিরের জাঁদরেল পুরোহিতরা।
হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান জম্মু ও কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী মন্দির। জম্মুতে পৌঁছে কাটরা, তারপর দুর্গম পথ পেরিয়ে, বহু সিঁড়ি ভেঙে পাহাড়ের উপরের মন্দিরে পৌঁছতে হয়। সাধ হলেও সেখানে পা রাখা প্রবীণদের পক্ষে বড় সহজ নয়। তাই পুণ্যলাভের ব্যবস্থা হল কলকাতাতেই (Kolkata)। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তারক সিং জানিয়েছেন, যাঁদের ইচ্ছে থাকলেও কাটরার বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে পৌঁছতে পারেন না, তেমন ভক্তদের জন্য কলকাতা পুরসভার ১১৬ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন বৈষ্ণোদেবী মন্দির হচ্ছে। বেহালার এই মন্দিরে বৈষ্ণোদেবীর মূর্তি আনা হয়েছে জয়পুর (Jaipur) থেকে। কাটরার বৈষ্ণোদেবীর বিগ্রহের আদলেই গড়া হয়েছে মূর্তি।
সাড়ে সাত বিঘার এই জমিতে ছিল জয়চণ্ডী ঠাকুরানি মন্দির। চারশো বছরের পুরনো ওই মন্দিরের পেল্লায় জমিতে দু’বিঘার একটি জলাশয় রয়েছে। পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি, এতদিন ঢেকে ছিল ঘাসের জঙ্গলে। তিন বছর হল, কলকাতা পুরসভা (KMC) রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর তারক সিং সিদ্ধান্ত নেন, এখানেই তৈরি হবে বৈষ্ণোদেবী মন্দির। সেইমতো কাজ শেষ হয়েছে, এসেছে বিগ্রহ। শুধু বৈষ্ণোদেবী নয়, বিশাল এই মন্দির চত্বরে আরও আট দেবদেবীর মন্দির থাকবে।
সবমিলিয়ে কলকাতার বৈষ্ণোদেবী নিয়ে আগ্রহ চরমে। ইতিমধ্যেই মন্দির খোলা-বন্ধের সময়সীমা জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ। আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রতিদিন ভোর ৫টায় মন্দিরের দ্বার খুলে যাবে, বন্ধ হবে দুপুর একটায়। ফের বিকেল চারটেয় সাধারণ ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দ্বার। বন্ধ হবে রাত দশটায়। আগামী ১৮ জানুয়ারি উদ্বোধনের দিন ধার্য হলেও আপাতত এখানে আরতি হচ্ছে রোজই। মঙ্গলবার রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত বিশেষ আরতি।
১৮ জানুয়ারি মন্দিরের দ্বারোদঘাটনের আগে রয়েছে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান। যোগ দিতে আসছেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুরোহিতরা। বারাণসী ছাড়াও ১৬, ১৭ ১৮ জানুয়ারি দেশের নানা প্রান্ত থেকে পুরোহিতরা আসবেন মন্দির চত্বরে। তিনদিন ব্যাপী পুজোর মাধ্যমে বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। বৈষ্ণোদেবীর মন্ত্রোচ্চারণ করে বেরোবে নিশান যাত্রা। মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, যেখানে এই মন্দির, সেখানে এক সময় গঙ্গা ছিল। লখিন্দরকে নিয়ে ভেসে গিয়েছিল বেহুলা। সেই হিসাবে জায়গাটি অত্যন্ত পবিত্র। জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী অত্যন্ত জাগ্রত। কথিত আছে, দেবীর দর্শন পেলে জীবনের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। মনস্কামনা পূরণ করতে এবার ভক্তদের ঢল নামবে বেহালার বৈষ্ণোদেবীতেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.