সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্তিক বীরত্বের প্রতীক, দেবকুলের সেনাপতি। আবার অপরূপ সৌন্দর্যেরও প্রতীক তিনি। তিনি যেন অশুভ শক্তি নিধনকারী। দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় কার্তিক পুজোর প্রচলন রয়েছে৷ সন্তানের কামনায় কার্তিক পুজো করে থাকেন দম্পতিরা৷ বিশেষত বন্ধ্যা নারীরাই কার্তিকের মতো সুন্দর ও বীরপুত্রের কামনায় এই পুজো করেন।
শোনা যায়, কার্তিক নাকি চিরকাল অবিবাহিত ছিলেন৷ কিন্তু কেন আজীবন চিরকুমার থাকলেন কার্তিক, তা নিয়ে সবারই মনে প্রশ্ন জাগে৷ নানা লোককথাও প্রচলিত রয়েছে৷ প্রচলিত লোককথা থেকে পাওয়া যায়, একদিন দানবদের পরাজিত করে কার্তিক বাড়ি ফিরছিলেন৷ তখন এক রূপবতী দেবকন্যার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। রূপবতী দেবকন্যার নাম ঊষা। কার্তিক তাঁকে বিয়ে করতে চান৷ ঊষাও রাজি হয়ে যান। ঊষাকে সঙ্গে নিয়ে কৈলাসের কাছাকাছি পৌঁছান কার্তিক৷ কিন্তু আচমকাই তাঁর মনে হয়, বাড়িতে বউ নিয়ে যাওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে কথা বলা উচিত৷ তাই ঊষাকে ধানখেতে দাঁড় করিয়ে রেখে তড়িঘড়ি দুর্গার কাছে যান কার্তিক৷ কথা বলে মায়ের থেকে অনুমতি নেন তিনি৷ কিন্তু সেই অনুমতি আদৌ কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে দোনামনা করেন কার্তিক৷ মনে উথালপাথাল হলেও, তড়িঘড়ি বর সেজে ধানখেতের দিকে রওনা দেন তিনি৷ কিন্তু আচমকাই মনে পড়ে মাকে প্রণাম করা হয়নি৷ আবারও বাড়ি ফিরে যান কার্তিক৷ গোটা বাড়িতে মাকে খুঁজে না পেয়ে অবাক হয়ে যান৷ কোথায় গেলেন মা? খোঁজাখুঁজি করতে করতে রান্নাঘরে পৌঁছান কার্তিক৷ এরপরের দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান৷ দেখেন, দুর্গা সদ্য নিহত একটি মহিষ খাচ্ছেন৷ কেন এমন তাড়াহুড়ো করে মহিষ খাচ্ছেন মা, প্রশ্ন করেন কার্তিক৷ পুত্রবধূ বাড়িতে এসে আদৌ তাঁকে খেতে দেবেন কী না, এই আশঙ্কা থেকেই তাড়াতাড়ি নাকি খাওয়াদাওয়া শুরু করেছেন দুর্গা৷ মায়ের কথা শুনে দুঃখ পান কার্তিক৷ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তিনি৷ ঊষাকে বিয়ে করবেন না বলেই স্থির করেন৷
এদিকে, তখনও ধানখেতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ঊষা৷ কার্তিক আর ফেরে না৷ অবশেষে তিনি জানতে পারেন কার্তিকের প্রতিজ্ঞার কথা৷ প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত বদল করেন ঊষাও৷ লজ্জায় ধানখেতেই লুকিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন ঊষা৷ কার্তিক মাসে আমন ধানের শিষ বেরোয়৷ অনেকেই বলেন ওই ধানের শিষই নাকি ঊষা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.