Advertisement
Advertisement
তারাপীঠ

সেজে উঠেছে তারাপীঠ, জেনে নিন ‘কৌশিকী’ অমাবস্যার মাহাত্ম্য

এই অমাবস্যায় মাকে পূজা করলে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয় বলেই বিশ্বাস।

People waits for Kaushiki Mela which is also the annual event of Maa Tara
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:August 29, 2019 2:15 pm
  • Updated:August 29, 2019 2:19 pm  

কথিত আছে, এই অমাবস্যা তিথিটিতেই সাধক বামাখ্যাপাকে দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে তারাপীঠ মহাশ্মশানে দর্শন দিয়েছিলেন। লিখছেন সেবাপীঠ মাতৃমন্দিরের আচার্যদেব স্বামী বেদানন্দ মহারাজ।

মার্কণ্ডেয় পুরাণ সূত্র থেকে জানা যায়, মহাপরাক্রমী দৈত্য ভ্রাতৃদ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভ ব্রহ্মাদেবের পরম ভক্ত ছিলেন। সাধনায় তুষ্ট ভগবান ব্রহ্মা ওদের বর দিয়ে বলেন, তোমরা ত্রিভুবনে অবধ্য হবে। তবে কখনও যদি কোনও অযোনিসম্ভবা নারীর সঙ্গে তোমাদের সংঘাত ঘটে তবে ওই নারীর দ্বারাই তোমরা নিহত হবে। এই কথাগুলি স্মরণে রেখো। ভগবানের বরে বলীয়ান শুম্ভ নিশুম্ভ ভাবল ত্রিভুবনে এমন কোনও নারীই জন্মাতে পারে না যে মাতৃগর্ভজাত নয়। অতএব তারা অমর, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। এরপর দানব ভ্রাতৃদ্বয় প্রথমেই স্বর্গরাজ্য আক্রমণ করল। ভীত দেবকুল তখন শুম্ভ নিশুম্ভর হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের শরণাপন্ন হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মহাকাব্য থেকে ধর্মবিশ্বাস, জানুন কৃষ্ণ জন্মকথার অন্তর কাহিনি]

মহাদেব ঠাট্টার ছলে ঘোর কৃষ্ণবর্ণা পার্বতীকে ডেকে বলেন, ‘হে কালিকে, তুমি এই বিপদ থেকে দেবতাদের রক্ষা করো।’ জনসমক্ষে পতিমুখে কালিকে সম্বোধন শুনে দেবী পার্বতী অত্যন্ত মর্মাহত হন। তৎক্ষণাৎ মানস সরোবরে গিয়ে নিজেকে অভিষিক্ত করে নিজ গাত্রের সকল কৃষ্ণবর্ণ কোষগুলিকে পরিত্যাগ করে এক অসামান্যা সুবর্ণ রূপ ধারণ করে পুনঃপ্রকটিতা হন। নিজ তনুদেহের ময়লা কোষগুলি থেকেই নববর্ণে নব কলেবরে রূপান্তরিত হয়েছিলেন বলেই তিনি দেবী কৌশিকী নামে খ্যাতা হন।

Tarapit

দেবী কৌশিকী অযোনিসম্ভবা ছিলেন, সেই কারণে কৌশিকী দেবীই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর থেকে হাজারও যোদ্ধৃ মাতৃকাকুল সৃষ্ট হয় এবং তারাই সমগ্র অসুরকুলকে বিনাশ করে দেয়। এই ঘটনাটি ভাদ্র অমাবস্যায় ঘটায়, পরবর্তীকালে এটি কৌশিকী অমাবস্যা নামে ধরাধামে খ্যাত হয়। কথিত আছে, ওই অমাবস্যা তিথিতেই সাধক বামাখ্যাপাকে দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে তারাপীঠ মহাশ্মশানে দর্শন দিয়েছিলেন। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনি সূত্রে শোনা যায়, দেবী কৌশিকী ‘তারা’ নামে ওই বিশেষ অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে বিরাজিতা থাকেন। সেই কারণে তারাপীঠ মহাশ্মশানে ওই দিন লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাবেশ ঘটে। ভক্তগণের বিশ্বাস, ওই দিন মাকে পূজা করলে মা ভক্তগণের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করে দেন। তাছাড়াও তারাপীঠ মহাশ্মশানে কৌশিকী অমাবস্যার গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ ওই বিশেষ তিথিটিতে মহাসাধক বামাখ্যাপাকে মা দর্শন দিয়েছিলেন। দেবী কৌশিকী এবং তারা মা অভিন্ন বলে বিশ্বাস ভক্তদের।

[আরও পড়ুন: পুণ্যার্জন করতে চান? জন্মাষ্টমীতে এই নিয়মগুলি অবশ্যই মেনে চলুন]

পুরাণ সূত্রে জানা যায়, কোনও এক কারণে তারামা একবার মহাতপস্বী ঋষি বশিষ্ঠদেবের উপর ক্রুদ্ধা হয়েছিলেন। মায়ের আচরণে ভীত বশিষ্ঠদেব তখন তারাপীঠ মহাশ্মশানে উপস্থিত হন এবং শ্বেতশিমূল বৃক্ষমূলে সাধনপীঠ রচনা করেন। তারামায়ের পুনঃকৃপা এবং ক্ষমা পাওয়ার জন্য কঠোরতম সাধনায় মগ্ন হন। সেই সাধনায় খুশি হয়ে অবশেষে মা দর্শন দিয়ে তাঁকে ক্ষমা করে দেন।

Tarapith

এরপর সেই পৌরাণিক কাল থেকে আজ পর্যন্ত হাজার হাজার তপস্বী ওই শ্বেতশিমূল তলায় বসে মাতৃসাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছেন। ওই সূত্র ধরেই এই সময়কালে আমরা সাধক বামাখ্যাপাকে জানতে পারি। কথিত আছে, প্রায় হাজার সাধকের সাধনার অন্তে ১১ হাজার বৎসর উত্তীর্ণের পর ওই শ্বেতশিমূল গাছটি আপনাআপনি আগুনে পুড়ে যায়।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement