শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ফলহারিণী কালী পুজোয় সর্বত্র জোর জাঁকজমক। জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যায় বিভিন্ন জায়গায় পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। তবে একমাত্র কুলটিতে হয় শ্বেতকালীর পুজো। যা সত্যিই অভিনব।
পুরাণ মতে দেবী কালী হলেন মহামায়ার কালিকা শক্তিরূপ। অসুরদের অত্যাচারে ও মানব সমাজের কান্না হাহাকার দেখে মহামায়া ভয়ংকর ক্রোধ ধারণ করেন। সেই সময় তার শরীর থেকে তীব্র জ্যোতি বের হতে থাকে তখনই কালো রূপ ধারণ করেন মহামায়া। মায়ের এই শ্যামা রূপই পূজিতা হন সর্বত্র। কোথাও মায়ের রং কালো কোথাও কৃষ্ণবর্ণ অর্থাৎ নীল। কিন্তু কুলটি লালবাজারে ফলহারিণী কালীর রং শ্বেতশুভ্র বা সাদা। মা কালী এখানে সাদা রূপে পূজিতা হন। যা সারা বাংলায় খুব একটা দেখা যায় না।
কুলটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের লাল বাজার এলাকায় দেবী ফলহারিনী কালী মূর্তি পুজো হয়। পুজোর প্রতিষ্ঠাতা এবং পূজারী মধুময় ঘোষ। মধুময় ঘোষ বলেন, “আমি স্বপ্নাদেশ পেয়ে এরূপে কালীপুজো শুরু করেছি। আগে কালী পুজো করতাম। ২০০৫ সাল থেকেই প্রথম শুরু হয় শ্বেতশুভ্র রূপে কালীপুজোর। এইরূপে ভবতারিণী প্রথম দর্শন দিয়েছিলেন সাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে। আমিও স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছি। তবে কালীর এমন সাদা রূপের আরাধনা, সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না।” পাশাপাশি গ্রামের মানুষও দেবী কালিকার সাধনায় মেতে উঠলেন বৃহস্পতিবার। প্রত্যেক অমাবস্যায় জাঁকজমক সহকারে হয় পুজো। স্থানীয় মানুষজনও সেই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাতার বাড়ির পাশেই এক চিলতে মন্দিরে পুজো নেন কালীসাধক রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে দর্শন দেওয়া ভবতারিণী বা সারদা জ্ঞানে কালী।
কুলটির লালবাজারে সম্পূর্ণ প্রস্থর নির্মিত মূর্তি রয়েছে দেবীর। পাশের জেলা বাঁকুড়ার শুশুনিয়া থেকে মূর্তিটি নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেই মূর্তির নিত্য পুজো হয়। প্রতিষ্ঠাতা মধুময় ঘোষ বলেন, “স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পরেই তিনি বাঁকুড়ায় উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তিনি মায়ের মূর্তিটি পান এই রূপেই, যে রূপে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তাই সেই রূপেরই আরাধনা শুরু করেন।” তিনি আরও জানান, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একমাত্র এখানেই রয়েছে সাদা রংয়ের কালীমূর্তি। বাংলাজুড়ে সাদা রংয়ের কালীমূর্তি বিশেষ দেখতে পাওয়া যায় না। পাশের জেলা বাঁকুড়া তালডাংরায় এই রূপে কালীপুজো হয়। তবে কুলটির ফলহারিণী কালী জেলার একমাত্র সাদা রূপের কালীপুজো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.