ছবি: সংগৃহীত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারিতে উত্তাল বাংলাদেশ। আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। ইসকনের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণের যোগ না থাকলেও তারা সন্ন্যাসীর পাশে আছে বলেই জানিয়েছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই প্রতিষ্ঠানের শিকড় কোথায়? প্রতিষ্ঠা কে করেছিলেন? ইসকন প্রতিষ্ঠানের নেপথ্য কারণই বা কী? এই প্রতিবেদনে রইল সব প্রশ্নের উত্তর।
ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা একজন বাঙালি। আরও স্পষ্ট করে বললে কলকাতার এক বাসিন্দার হাতে গড়ে ওঠে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসায়নেস (ISKON)। বাংলায় লিখলে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ বা সবার পরিচিত ইসকন।
১৯৬৫ সালে সত্তর ছুঁইছুঁই বৃদ্ধ অভয়চরণ দে পকেটশূন্য অবস্থায় পাড়ি দেন আমেরিকায়। ছেলেবেলায় তাঁর কুষ্ঠি দেখে এক জ্যোতিষ বলেছিলেন, তিনি আমেরিকায় পাড়ি দেবেন। স্বনামধন্য ধর্মপ্রচারক হিসাবে নাম লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়। খিদিরপুর থেকে জাহাজে ওঠার সময় তাঁর সেই ভবিষদ্বাণী মনে ছিল? প্রশ্নটার আজ কোনও মূল্য নেই। সেই অভয়চরণ তথা ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ লীলাধর গড়ে তুললেন ইসকন। তাঁর মননে শুধুই কৃষ্ণ বিরাজ করতেন। চিন্তাভাবনা ‘পার্থসারথী’কে নিয়েই, তা আলাদা করে বলার কোনও প্রয়োজন নেই।
১৯৬৬ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্র তথা শিক্ষক ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ লীলাধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রতিষ্ঠা করেন ইসকন। তবে কি খুব সহজে ইসকন বর্তমান রূপ পেয়েছিল? উত্তর, না। অভয়চরণ গড়ে তোলেন ‘হরে কৃষ্ণ’ আন্দোলন। আটলান্টিকার ওপারে পা রাখার পর একাকী সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি যেখানেই সুযোগ পেতেন সেখানেই বক্তৃতা দিতেন। এবং মানুষ তাঁর শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হতে থাকেন।
১৯৬৬ সালে, নিউ ইয়র্ক সিটির লোয়ার ইস্ট প্রান্তে একটি স্টোরফ্রন্ট থেকে কাজ শুরু করেন। একটি আধ্যাত্মিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে নাম দেন ইসকন। তবে ‘সভ্য’ দেশের নাগরিকরা কথা শুনবেন কেন? তা আঁচ করতে পেরে সমাজ থেকে বহিষ্কৃত আমেরিকানদের নিজের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেন। তাঁদেরকে ভগবত গীতার অর্থ বোঝানো শুরু করেন তিনি। সেই একক প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া প্রতিষ্ঠান আজ বিশ্বের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে। তাঁরা ভজন ও ভক্তির মাধ্যমে দেশ ও বিশ্বের মানুষকে ভগবানের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন। কৃষ্ণ নাম বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য তাঁদের।
বিশ্বজুড়ে হাজারের বেশি মন্দির রয়েছে। এমনকী পাকিস্তানেও রয়েছে ইসকন। তাদের ৪০টি গ্রামীণ সম্প্রদায় এবং ১০০টিরও বেশি নিরামিষ রেস্তরাঁ রয়েছে। ভারতে প্রথম ইসকন মন্দির নির্মিত হয় ১৯৭৫ সালে। শ্রী কৃষ্ণের রাসলীলা ক্ষেত্র বৃন্দাবনে। এই মন্দিরটি কৃষ্ণ-বলরাম মন্দির নামেও পরিচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.