নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মঙ্গলবার সারা দিন বিজয়া সারলেন তারাপীঠের ভক্তরা। তিথি মেনে ভক্তদের মাঝে সারাদিন থাকলেন তারা মা। গর্ভগৃহ ছেড়ে দিনভর তিনি রইলেন মন্দিরের বিরাম মঞ্চে। সেখানেই মায়ের অপরূপ মূর্তি দর্শন করলেন ভক্তরা। এই ভাবেই তারাপীঠে পালিত হল তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস।
[শারদীয়া নয়, লক্ষ্মী-নারায়ণ পুজোয় আনন্দে মাতেন এই গ্রামের বাসিন্দারা]
পুরাণ মতে, শুক্লা চতুর্দশীর দিন তারাপীঠে মায়ের আবির্ভাব হয়। তাই এদিন মায়ের পুজো দিতে শুধু বীরভূম তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকী ভিনরাজ্য থেকেও বহু পুণ্যার্থী ভিড় জমান তারাধামে। পুজো দিয়ে মনস্কামনা পূরণের আকুতি জানান মায়ের পায়ে। শারদীয়ার শেষে মাকে কাছে পেয়ে বিজয়াও সারেন তাঁরা। নিয়ম মতোই মঙ্গলবার, সূর্যোদয়ের আগে গর্ভগৃহে মা তারাকে স্নান করানো হয়। তারপর রাজবেশ পরিয়ে দেবীকে নিয়ে আসা হল বিরাম মঞ্চে। সেখানেই দিনভর মা থাকেন ভক্তদের সঙ্গে। তবে এইদিনটি অন্য আর পাঁচটি দিনের থেকে ব্যতিক্রম। কারন, এদিন মা তারাকে পশ্চিম দিকে মুখ করে বসানো হয়। কথিত আছে, ঝাড়খণ্ডের মলুটি গ্রামের ‘মা মৌলক্ষা’ ও ‘তারা মা’ দুই বোন। এদিন তাই মৌলক্ষার মন্দিরের দিকেই থাকে তারা মায়ের মুখ।
অন্য দিনগুলিতে তারাপীঠে মাকে দুপুরে অন্নভোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আবির্ভাব দিবসে দিনে মা তারাকে অন্নভোগ দেওয়া হয় না। এদিন উপবাস পালন করেন সেবায়েত ও ভক্তরা। সন্ধ্যায় বিরাম মঞ্চ থেকে মাকে মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়ার পর আরও একবার স্নান করানো হয়। তারপর ভোগ নিবেদন করা হল দেবীর উদ্দেশে। আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে মঙ্গলবার সেজে উঠছে তারাধাম। ফুল, আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে তারাপীঠ মন্দিরকে। দূরদূরান্ত থেকে আসা পূণ্যার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধার না হয়, তার ব্যবস্থা করেছিলেন সেবায়েতরাই। কারণ, কৌশিকী অমাবস্যায় পুজো দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে মদত দেওয়ার জন্য সেবাইতদের একাংশকে দায়ী করেছিলেন ভক্তরা। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “মায়ের আবির্ভাব তিথিতে পুজো দিতে বহু ভক্ত আসেন তারাপীঠে। তাদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তারজন্য আমরা সবরকম ব্যবস্থা করেছি”।
ছবি: সুশান্ত পাল
[কেন কোজাগরী? জেনে নিন এই লক্ষ্মীপুজোর মাহাত্ম্য]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.