স্টাফ রিপোর্টার, কৃষ্ণনগর: দু’বছর পর রথযাত্রা (Rath Yatra 2022) উপলক্ষে ফের জমজমাট ইসকন। ইতিমধ্যেই মাসির বাড়ি পৌঁছেছেন জগন্নাথ দেব। এবার তাঁর মেনুতে থাকছে পিৎজা, পাস্তা, চাউমিন, বিরিয়ানির মতো বাহারি পদ।তবে সমস্ত রান্নাই হবে নিরামিষ। এছাড়া আপেল, কাজুর পাশাপাশি বাহারি ফল থাকবে জগন্নাথদেবের ভোগে। মিষ্টির রকমফেরও কিন্তু কম নয়। রসগোল্লা, পান্তুয়া, ছানার জিলিপি, সরপুরিয়া, সরভাজার মত মিষ্টি তো থাকছেই, আরও যতরকমের মিষ্টি হয়, প্রায় সবই থাকছে মেনুতে। ফলে ভোগের নাম যদিও ৫৬ ভোগ হলেও পদের সংখ্যা ১০০ ছাড়াবে।
নদিয়ার মায়াপুর ইসকন মন্দিরে অস্থায়ীভাবে নির্মিত গুন্ডিচা অর্থাৎ জগন্নাথের মাসিরবাড়ি। শুক্রবার বিভিন্নরকম ফল দিয়ে সাজানো হয়েছে সেই গুন্ডিচা মন্দির। এদিন দুপুরে মায়াপুরের রাজাপুর মন্দির থেকে রওনা দিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে সুভদ্রা, বলরামকে সঙ্গে নিয়ে জগন্নাথদেব রথে চড়ে পৌঁছেছেন মাসির বাড়িতে। রথ থেকে নামিয়ে সুভদ্রা, বলরাম ও জগন্নাথদেবকে বসানো হয়েছে গুন্ডিচা মন্দিরের আসনে। আলোকোজ্জ্বল সেই মন্দিরে তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড়। জগন্নাথদেবের সেই অপরূপ দৃশ্য দর্শন করতে কার্যত হুড়োহুড়ি অবস্থা। দর্শন আরতির পর অবশ্য লুচি, সবজি, মিষ্টান্ন-সহ বিভিন্নরকম মিষ্টি দিয়ে জগন্নাথদেবকে দেওয়া হয় রাতের ভোগ।
শনিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ জগন্নাথদেবকে শয়ন থেকে উঠিয়ে বাল্যভোগ, ৫৬ ভোগ-সহ রাত পর্যন্ত আটবার ভোগ দেওয়া হবে। মাসির বাড়িতে আটদিন ধরেই থাকছে বিপুল আয়োজন। ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “আমাদের এখানে আটটি বড় কিচেন রয়েছে। তার মধ্যে মূল কিচেনে জগন্নাথদেবের জন্য ৫৬ ভোগ রান্না করা হবে। এক-একদিন এক-একজন সেই ভোগ রান্না করবেন। আমাদের এখানে প্রায় ১০০০ জন বিদেশি ভক্ত রয়েছেন। বিভিন্নদেশের সেই ভক্তরা তাদের ঠাকুরের জন্য যে কিচেন রয়েছে, সেখানে তাদের দেশের খাবার রান্না করে মাটির পাত্রে করে জগন্নাথদেবকে ৫৬ভোগের সঙ্গে অর্পণ করবেন। তাতে পিৎজা,পাস্তা, চাউমিন, বিরিয়ানির মত একাধিক বিদেশি খাবারও থাকবে। তবে তা সম্পূর্ণ শুদ্ধাচারে নিরামিষ রান্না হবে।” তবু জগন্নাথদেবের ভোগে এই ধরনের বিদেশি খাবার? সেই প্রশ্নের উত্তরে রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “জগন্নাথদেব জগতের নাথ। তাই তাকে বিভিন্ন দেশের খাবার নিরামিষভাবে শুদ্ধাচারে রান্না করে দিতে তো কোন প্রশ্ন থাকার কথা নয়।”
করোনা পরিস্থিতির কারণে ধুমধাম করে রথযাত্রা উৎসব দু’বছর বন্ধ থাকার পর এবার বিশাল আয়োজন। শুক্রবার বেলা প্রায় আড়াইটের পরে রাজাপুর মন্দির থেকে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা বের হয়। রথের সামনে ঝাড় দিয়ে শুরু হয় সেই যাত্রা। মঙ্গলারতির পর রথের রশিতে টান দিয়ে সেই যাত্রার সূচনা করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ্র। ছিলেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা, নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা, জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি, পুলিশ সুপার ঈশানী পাল-সহ অনেকেই। সঙ্গে হাজার হাজার ভক্ত। ভক্তদের রশির টানে এগিয়ে চলে জগন্নাথদেবের রথ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.