Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2022

Durga Puja 2022: নবপত্রিকা স্নানেই সপ্তমীর সূচনা, জানেন এর মাহাত্ম্য?

কী কী থাকে এই নবপত্রিকায়?

Durga Puja 2022: What is 'Nabapatrika' and know the significance of this ritual| Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 1, 2022 9:45 pm
  • Updated:October 1, 2022 10:06 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ বলেন কলাবউ। আবার গণেশের পাশে থাকে বলে কেউ কেউ বলেন গণেশের বউ। আসলে সেটি নবপত্রিকা (Nabapatrika)। দেবী দুর্গার পূজার সঙ্গেই ওতপ্রোত জড়িয়ে এই নবপত্রিকার পূজা। নবপত্রিকার পূজা আসলে ইঙ্গিত দেয় মানুষের উৎসব পালন এবং ধর্মাচরণের বহু প্রাচীন রীতির। তাই দুর্গাপুজোর (Durga Puja) যেমন মাহাত্ম্য, তেমনই স্বতন্ত্র তাৎপর্য আছে নবপত্রিকা এবং তার পুজোরও।

প্রথমেই দেখে নেওয়া যাক, কী কী থাকে এই নবপত্রিকায়।
রম্ভা, কচ্চী, হরিদ্রা চ জয়ন্তী বিল্বদাড়িমৌ
অশোকা মানকঞ্চেব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা
অর্থাৎ কলাগাছ, গুঁড়ি-কচুর গাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তীর ডাল, বেলের ডাল, দাড়িম গাছ, অশোকের ডাল, মানকচুর গাছ ও ধানের গাছ। এই ন-টি গাছ আবশ্যক নবপত্রিকা রচনায়। বেলতলায় যেমন দেবী দুর্গার অধিবাস হয়, তেমন নবপত্রিকারও অধিবাস হয়। এরপর এই গাছগুলি আর শুধু গাছ থাকে না। হয়ে ওঠে দেবীর প্রতীক। কলাগাছ হন ব্রাহ্মণী। ব্রাহ্মণীর বিভূতি লক্ষ করা যায় কলাগাছের মধ্যে, তাই হয়তো এইরকম সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গুঁড়ি-কচু হন দেবী কালিকা। যদিও এক্ষেত্রে এরকম সরাসরি সাদৃশ্য তেমন কিছু পাওয়া যায় না। হরিদ্রা হন দেবী দুর্গা স্বয়ং। এক্ষেত্রে গাত্রবর্ণ তুলনীয়। বর্ষাশেষে সতেজ হলুদ গাছ যে উৎসবের অঙ্গীভূত হয়ে উঠতে পারে, এই মতোই গ্রহণযোগ্য। জয়ন্তীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী কার্তিকী। দেবসেনাপতি কার্তিক থেকে দেবতাদের জয় সূচিত হয়, সেই অর্থে জয়ন্তী আর দেবী কার্তিকী মিলেমিশে একীভূত হয়ে গিয়েছেন। বেল গাছ যে শিবের প্রিয়, তা আমরা সকলেই জানি। বেলের অধিষ্ঠাত্রী তাই শিবা। দাড়িম বা ডালিম গাছে রক্তদন্তিকার অধিষ্ঠান। এক্ষেত্রেও দাড়িমের রং এবং আকারের সঙ্গে এহেন সংযোগের সাদৃশ্য লক্ষিত হয়। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: বনগাঁয় পুজো উদ্বোধনে গিয়ে খোশমেজাজে মদন মিত্র, গাইলেন ‘ও লাভলি’]

 

অশোকের অধিষ্ঠাত্রী দেবী শোকরহিতা। মানকচুগাছে অধিষ্ঠাত্রী দেবী চামুণ্ডা। আর ধানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মী। দেবী দুর্গার পুজো শুরু হয় সপ্তমীর দিন। সেদিন সকালে হয় নবপত্রিকার স্নান। এই নয়টি গাছকে পাট দিয়ে বাঁধতে হয়। পাট অর্থে রেশমের দড়ি বোঝায়, যদিও এখন নিয়ম অনুযায়ী সামান্য রেশম রাখা হয়। এরপর সেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বেলতলায়। যে শাখায় জোড়া বেল থাকে, সেই শাখাটিকে কেটে এবার জুড়ে নেওয়া হয় নবপত্রিকার সঙ্গে। রাজার অভিষেকে যেমন নানা নদী বা সমুদ্রের জল প্রয়োজন হয়, নবপত্রিকাকে স্নানের সময়ও সেই রীতি। নানা ঘটের জলে স্নান করানো হয় নবপত্রিকাকেও। এরপর বিধিমতে পুজো করে সেটিকে স্থাপন করা হয় দুর্গাপ্রতিমার ডান পাশে। গণেশের ঠিক পাশটিতে থাকে বলে কেউ কেউ একে বলে থাকেন কলাবউ।

শরৎকালে দুর্গাপুজোর প্রচলন রামচন্দ্রের হাত ধরে, এমনটাই আমরা জানি। যদিও মূল বাল্মীকি রামায়ণে রাবণবধের আগে দুর্গাপুজোর উল্লেখ নেই। চণ্ডীতে উল্লেখ আছে, শরৎকালের এক মহাপুজোর কথা। সেখানে দেবীমাহাত্ম্য পাঠের উল্লেখও আছে। কিন্তু পূজাটি সঠিক যে কী, তা স্পষ্ট নয়। বিশেজ্ঞদের মতে, এই পূজাই হল নবপত্রিকা পূজা। আসলে সেই পুরাকালে যখন সাকার মূর্তির উপাসনা ছিল না, তখন মানুষের ধর্মাচরণের সঙ্গী ছিল এই উৎসব। অরণ্যজীবন তখন মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। আর তাই মানুষের উৎসব এই প্রয়োজনীয় উদ্ভিদ বা শস্যকে বাদ দিয়ে ছিল না। ইতিহাসের দিকে তাকালে আরও অনেক জাতির ক্ষেত্রেই শীতের প্রারম্ভে উদ্ভিদ নিয়ে এরকম উৎসবে মেতে ওঠার প্রথা দেখতে পাওয়া যায়। এখানেও তা-ই ছিল। কালে কালে সেই শস্যপূজা বা উদ্ভিদপূজার রীতির সঙ্গে দেবীর মাহাত্ম্য যুক্ত হয়েছে। এক একটি উদ্ভিদের সঙ্গে দেবীর এক এক রূপের সংযোগ রচিত হয়েছে। আর সেই প্রাচীন নবপত্রিকার আরাধনা অঙ্গীভূত হয়েছে দুর্গার অকালবোধনের সঙ্গে। এই রীতি তাই আজও সাক্ষ্য বহন করে আমাদের অতীত উৎসবের। সাক্ষ্য দেয় সেই বিবর্তনেরও, যেখানে অতীত রীতির সঙ্গে সময়ের পরত যোগ হতে হতে বদলে গিয়েছে, মানুষের উৎসবও । 

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: মণ্ডপসজ্জায় জুতোর ব্যবহার ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’, কলকাতার এই পুজোকে আইনি নোটিস]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement