ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পুজো শেষেও রীতি-আচারের ঘাটতি নেই। ত্রয়োদশীতে বীরভূমের অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালিতলায় নিয়ম মেনে হয়ে গেল কুমারী পুজো। তবে এর সঙ্গে অষ্টমী বা নবমীর কুমারী পুজোর তফাত এই যে, ত্রয়োদশীতে কঙ্কালিতলায় পূজিতা হন ৫১ জন কুমারী।
নিয়ম অনুযায়ী, এদিন ত্রয়োদশীর দিন সতীর দেহের ৫১টি খণ্ড সংকল্প করে একটি ঘটে স্থাপন করা হয়। এরপর কঙ্কালিতলা কালী মন্দির সংলগ্ন পঞ্চবটী গাছের নীচে ৫১ জন কুমারীর পুজো শুরু হয়। এই বিশেষ পুজো ঘিরে কঙ্কালিতলায় মেলা বসে এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম হয়।
পুরানে কথিত আছে, মহাদেব যখন সতীর মৃতদেহ নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন তখন সতীর দেহ ৫১টি খণ্ডে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ধরণীর বিভিন্ন স্থানে। একটি খণ্ড পড়ে কঙ্কালিতলায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কঙ্কালিতলা পঞ্চায়েতের কাপাসটিকুড়ি গ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য গত ৪৪ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে কুমারী পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। তারপরেই এখানে বুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিষ্ঠিত পঞ্চবটী বট গাছের নীচে ৫১ জন কুমারীকে পুজো করা শুরু হয়।
পুজোর প্রায় এক মাস আগে থেকে কঙ্কালিতলার আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের ৫ থেকে ৯ বছর বয়সের কুমারীদের পরিবারের সদস্যরা পুজোর জন্য নাম লিখিয়ে যায়। পরে এদের মধ্যে ৫১ জনকে বেছে নেওয়া হয়। প্রতি বছর ত্রয়োদশীর সকাল থেকে পুজোর আয়োজন শুরু হয়। কুমারীদের লাল পাড় শাড়ি পরানো হয় এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয় দেবীর মতো। এরপরে সতীর দেহের ৫১টি খণ্ডকে মন্ত্রের দ্বারা একত্রিত করে সংকল্পের মাধ্যমে ঘটে স্থাপন করা হয় এবং সতীর পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হয়। সকাল ১০ টা থেকে এই পুজো শুরু হয়, চলে চার ঘন্টা। কুমারীদের যে ভোগ খেতে দেওয়া হয়, সেটাই প্রসাদ রূপে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
দেখুন কুমারী পুজোর ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.