এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন দমদম পার্ক ভারতচক্রের পুজো প্রস্তুতি৷
বিশ্বদীপ দে: ‘রক্তকরবী’র বিশুপাগলের কাছে নন্দিনী ছিল ব্যথার আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা ‘দুখজাগানিয়া’। এই শহর তথা বিশ্বকে জাগাতে এবার দমদম পার্ক ভারতচক্রের পুজোর থিমও তাই – ‘দুখজাগানিয়া’। এই ঘোর করোনাকালে জেগে ওঠার গল্প শোনাচ্ছেন তিনি। যেন অতিমারীর অতিকায় দুঃখকে হারিয়ে জেগে ওঠা শহরের জিতে যাওয়ার আখ্যান। পরিকল্পনা ও রূপায়ণে শিল্পী অনির্বাণ দাস। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘ছোটবেলায় পড়া গল্প মনে আছে? কোনও এক দৈত্য এসে ঘুম পাড়িয়ে দিল কোনও একটা শহরকে। ঠিক সেভাবেই এই করোনা আবহে কল্লোলিনী কলকাতা (Kolkata) ঘুমিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ ঘুম, ক্লান্ত ঘুম। প্রায় সাত মাস ধরে ঝিমিয়ে ছিল শহর। আমার মনে হয়েছে, আগমনীর সুরে ঢাকের বাদ্যিতে যেন আস্তে আস্তে জাগতে শুরু করেছে কলকাতা। ধীরে ধীরে ফিরছে স্বাভাবিকতা। এই ঘুম ভাঙা শহরের গল্পটাই দেখানো হয়েছে আমাদের পুজোয় (Durga Puja 2020)।’’
বিজ্ঞাপন সেভাবে মেলেনি। কমেছে বাজেট। কিন্তু তাতেও না দমে বাঁশ, কাঠ, কাপড়ের আয়োজনে অভিনব এক প্রয়াস। দর্শনার্থীরা পুজো প্রাঙ্গনে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন আড়মোড়া ভাঙা বেড়াল, দুধের ক্যানওয়ালা সাইকেল, শহুরে বাদ্যযন্ত্র গিটার ও স্যাক্সোফোনের মতো সব জেগে ওঠার মেটাফর। অনেক উঁচুতে একটা বাড়ির ছাদে দেখা মিলবে এক মোরগেরও। সেই মোরগ যেন এই শহর ও গোটা পৃথিবীকে ডেকে তুলছে ঘুম থেকে।
তবে নিঃসন্দেহে এর মধ্যে এক অন্যতম সংযোজন এক অতিকায় কেটলি। তার গায়ে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ, দক্ষিণেশ্বরের মন্দির, কালীঘাট মন্দিরের মতো বাঙালির চিরচেনা সব জায়গার স্কেচ। শিল্পী জানালেন, কেটলি থেকে ধোঁয়া বেরতেও দেখা যাবে।
প্রতিমা সাবেকি ঘরানার, একচালা। প্রতিমা নির্মাণ করেছেন শিল্পী সৌমেন পাল। প্রতিমার প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয়েছে কালো রং। যাতে দূর থেকেই স্পষ্ট দেখা যায়। আলোক পরিকল্পনায় প্রেমেন্দুবিকাশ চাকি। সংবর্ত জানা গানওলা তৈরি করে দিয়েছেন পুজোর থিম সং। তাতেও থাকছে সকলের সঙ্গে ফের দেখা হওয়ার আশ্বাস।
করোনা আবহে সমস্ত সতর্কতা মেনেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। থাকবে স্যানিটাইজেশন টানেল, থার্মাল চেকিংয়ের ব্যবস্থা। মণ্ডপে প্রবেশ না করেও যাতে প্রতিমা দেখা যায়, ব্যবস্থা সেরকমই। অনির্বাণবাবুর অনুরোধ, ‘‘বয়স্করা ও ছোটরা বাড়িতেই থাকুক। কিন্তু বাকিরা যেমন দৈনন্দিন কাজে বেরচ্ছেন, সেভাবে পুজোর জন্যও বেরন। তবে অবশ্যই সতর্ক থেকে, সমস্ত নিয়ম মেনে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.