কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেন বেলডাঙার (Beldanga) চেয়ারপার্সন। ঘটনার জেরে মুর্শিদাবাদ জুড়ে নৌকায় বিসর্জনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল জেলা প্রশাসন। ভবিষ্যতে বিসর্জনের ক্ষেত্রে নৌকায় মাঝি ছাড়া কাউকে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাজরা পরিবার।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। দশমীর বিকেলে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার হাজরা বাড়ির দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ডুমনি নদীতে। এলাকার আরো কয়েকটি দুর্গা প্রতিমাও সেইসময় ছিল নদীতে। নদীতে চলছিল শোভাযাত্রা। সেই সময় হঠাৎ করে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে উলটে যায় প্রতিমা ও যাত্রীবোঝাই একটি নৌকা। একই সঙ্গে পাশের নৌকাটিও উলটে যায়। তাতে থাকা যাত্রীরা সাঁতরে পাড়ে ওঠার চেষ্টা করেন। বেশ কয়েকজন উঠেও পড়েন। পরে সন্ধের পর বোঝা যায় যে ওই নৌকায় থাকা বেশ কয়েকজন নিখোঁজ। এরপরই খোঁজাখুঁজি শুরু হয় নদীতে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। রাতে উদ্ধার হয় হাজরা পরিবারের ২ সদস্য-সহ ৫ জনের দেহ। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এক লহমায় পালটে যায় এলাকার পরিস্থিতি। স্বজন হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার।
এই ঘটনার পরেরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই নৌকায় বিসর্জনের ঝুঁকি এড়াতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। কোনও পুজোর ক্ষেত্রেই ওই জেলায় নৌকায় করে বিসর্জন দেওয়া যাবে না, সাফ নির্দেশ পুলিশের। হাজরা বাড়ির তরফে বলা হয়েছে, নৌকোয় বিসর্জনের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র মাঝিরাই থাকতে পারবেন নৌকায়। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বেলডাঙার চেয়ারপার্সন। কিন্তু কীভাবে দুর্ঘটনা? কেন আচমকা উলটে গেল নৌকো? এপ্রসঙ্গে এক মাঝি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত নৌকার সকলেই মদ্যপ ছিলেন। জোর করে মাঝিকে নামিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা কয়েকজন সেখানে ছিলেন। আর তাতেই ঘটে এই বিপত্তি। পুলিশ জানিয়েছে, সাঁতার জানতেন না মৃতরা। এছাড়াও প্রতিমার একটি দড়ি আটকে গিয়েছিল মৃতদের পায়ে। সেই কারণেই কোনওভাবে তাঁরা উঠতে পারেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.