সংগ্রাম সিংহ রায়, শিলিগুড়ি: বিসর্জনের প্রতিমার সঙ্গে মহানন্দা নদীজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফুল ও বেলপাতা সংগ্রহ করে তা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দেওয়াই ফি বছরের দস্তুর। তবে এবার থেকে আর ফেলে দেওয়া হবে না। শিলিগুড়ি পুরনিগম এই ফুল ও বেলপাতা সংগ্রহ করে জৈব সারে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। অভিনব এই পরিকল্পনা বিসর্জনের ফুল ও বেলপাতা পরিষ্কার করতে গিয়ে মাথায় এসেছে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya)।
একসঙ্গে অতিরিক্ত ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত সরকারিভাবে এবার বিসর্জনের দিন ঠিক করা হয়েছে। এই চারদিন ধরে সমস্ত ফুল বেলপাতা এবং সঙ্গে যদি অন্য কোনও পাতাও থাকে, সেগুলো সংগ্রহ করবেন পুরনিগমের কর্মীরা। অশোকবাবু জানান, “পুরনিগমেরই জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের এক কর্মীর মাথায় প্রথম এই পরিকল্পনা আসে। তিনি প্রস্তাব দিতে আমরা তা লুফে নিই। সত্যিই তো! এগুলিকে যদি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা যায় তাহলে তার চেয়ে ভাল কিছু হতে পারে না।” আপাতত বিসর্জনের ফুল এবং বেলপাতা সংগ্রহ করা হলেও এই পরিকল্পনাকে ভবিষ্যতে আরও পরিবর্ধিত করার চিন্তাভাবনা রয়েছে বলেও চেয়ারম্যান জানান।
শিলিগুড়ির মূলত মহানন্দা নদীর দু’টি ঘাটে বিসর্জন হয়। একটি লালমোহন মৌলিক নিরঞ্জন ঘাট এবং অন্যটি নৌকাঘাট। এখানকার জল পরিষ্কার থাকায় এগুলো সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাকি নদীগুলি পুরনিগমের এলাকার বাইরে থাকায় সেগুলিকে এখনই পরিকল্পনার মধ্যে আনা হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকেও একই পরিকল্পনার মধ্যে আনা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। দু’দিন ধরে বিভিন্ন পুজো কমিটির ফেলে দেওয়া ফুল ও বেলপাতা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। সেগুলিকে ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডের একটি ইউনিট বসিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন চা বাগান এবং উদ্যানপালন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সফল হলে বাণিজ্যিকভাবে টেন্ডার করে এগুলো বিক্রি করে দেওয়া হলে পুরনিগমের আয়ও বাড়বে এবং সার তৈরির খরচ উঠে আসবে বলে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে শিলিগুড়ির ফুলবাজারগুলি থেকে ফুল ও পাতার বর্জ্যগুলি আলাদাভাবে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছে পুরনিগম। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিভিন্ন বাড়িতে পুজোর ফুল, পাতা, জঞ্জাল অপসারণের গাড়ির সঙ্গে ফেলে দেন না অনেকেই। ফলে সেগুলিকেও সংগ্রহ করা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.