এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন বেহালা ক্লাবের পুজোর প্রস্তুতি৷
সায়নী সেন: পেটের দায়ে কত মানুষই না ভিড় জমিয়েছিলেন ভিনরাজ্যে। ‘মাথায় ছোট বহরে বড়’ বাঙালি সন্তানদের তাঁদের নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না এতটুকু। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে সেইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়েছে আমাদের। লকডাউনের (Lockdown) সময় তাঁদের জন্য ছিল না খাবার, জলের ব্যবস্থা। এমনকী যানবাহনের বন্দোবস্তও ছিল না। তাই তো বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। কারও গর্ভে ছিল সন্তান। আবার কোনও মা তাঁর আত্মজকে কোলে নিয়ে হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল। কেউ চলার পথে পাশে পেয়েছেন স্বামীকে। আবার কেউ তাঁকেও পাননি। কেউ বহু কষ্ট করে ফিরতে পেরেছেন নিজের গ্রামে, বাড়িতে। আর কেউ ক্লান্তিতে পথের মাঝেই ঢলে পড়েছেন মৃত্যুর কোলে।
তবে সেই দুর্দশার অন্ধকার এখন কিছুটা কেটে গিয়েছে। নিউ নর্মালে যেন খানিক ফিকে তাঁদের কষ্টের কাহিনি। এবার সেই সুদূর কৈলাস থেকে বাপের বাড়ি আসার পালা উমার। পথে বাধাবিপত্তি থাকতে পারে, কিন্তু তাতে দমে যাওয়ার পাত্রী নন প্রজাপতি দক্ষের মেয়ে। তাই তো ‘দাক্ষ্যায়নী’র আগমনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বেহালা ক্লাবের (Behala Club) সদস্যরা।
কোভিড (Covid-19) পরিস্থিতিতে বাজেটে কাটছাঁট হয়েছে। তাই খুব কম সরঞ্জামের মাধ্যমে থিমভাবনা ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। চলতি বছরেও শিল্পী অদিতি চক্রবর্তীর কাঁধেই রয়েছে বেহালা ক্লাবের থিমভাবনা ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব। তবে এই প্রথমবার নয়, গতবারও বেহালা ক্লাবের মণ্ডপে চড়ক-গাজনের পরিবেশ ফুটিয়ে তুলে প্রশংসা পেয়েছিলেন অদিতি। সাফল্যের ঝুলিতে বহু পুরস্কারও সঞ্চয় করেছিলেন বেহালা ক্লাবের পুজোপাগলরা। থিমভাবনার সঙ্গে ভারসাম্য রেখেই তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। রাজ্য সরকারের নির্ধারিত গাইডলাইন মেনে প্রতিমার উচ্চতা স্থির করা হয়েছে।
নতুন জুতো পরে এ প্যান্ডেল সে প্যান্ডেল ঘুরে ঘুরে দুর্গাপুজোয় বাঙালি পায়ে ফোসকা ফেলবে না, তা যেন ভাবাও দুষ্কর। কিন্তু করোনা আবহে প্যান্ডেল হপিং করতে গেলে অবশ্যই কিছু শর্ত মানতেই হবে। বেহালা ক্লাবও তার ব্যতিক্রম নয়। সংক্রমণ এড়াতে তাই ক্লাব সদস্যরা নির্দিষ্ট কোভিড বিধি মেনেই দর্শনার্থীদের প্রতিমা দর্শনের বন্দোবস্ত করে দেবেন বলেই ভাবনাচিন্তা করা হয়েছে। তবে আপনি চাইলে বেহালা ক্লাবের মণ্ডপের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েও কম সময়ের মধ্যেই প্রতিমা দর্শন সেরে নিতেই পারেন। ভোগ রান্নার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। না হয় ২০২০ সালের দুর্গাপুজো (Durga Puja 2020) কিছুটা ব্যতিক্রমী। তবু প্রজাপতি দক্ষের কন্যাকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখতে চান না পুজো উদ্যোক্তারা। পরিবর্তে নিউ নর্মালে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনার সঙ্গে মোকাবিলা করে উমাবরণের জন্য একটু একটু করে তৈরি হচ্ছেন ক্লাব সদস্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.