সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কাপড়ের ক্যানভাস। তার সামনে তুলি হাতে বসে শিল্পী আজিজুল। লাল, নীল, সাদা, কালো, হলুদ, সবুজ রঙে নিপুন হাতে তিনিই মা দুর্গাকে ফুটিয়ে তুলছেন পটচিত্রে। সঙ্গী পার্থসারথী মণ্ডল, অপূর্ব নন্দী, কাজল মণ্ডল, অরূপ সিং, বিভাস সাউ-রা। সকলেই এখন মগ্ন ঐতিহ্যবাহী পটচিত্রে। বর্ধমানের এই ছবি প্রমাণ করে যে, ওই জেলায় সম্প্রীতি আর সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট।
প্রতিবছর বর্ধমান শহরের পুজোয় (Durga Puja 2020) থাকে থিমের ছড়াছড়ি। বিগ বাজেটের সব পুজো একে অপরকে টেক্কা দেয়। এবার সেই আড়ম্বর নেই। কিন্তু তার মধ্যেও ছিমছাম থিমের পুজো হচ্ছে। বর্ধমানের একটি মণ্ডপে এবার ফিরছে হারাতে বসা লোকশিল্প পটচিত্র। মেদিনীপুর আর ওড়িশার একাংশেই যা এখন সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। সেই পটচিত্র ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা। যাঁরা সকলেই বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা। এই শিল্পীর দলে রয়েছেন শেখ আজিজুলও।
অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় জন্মেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর রচিত শ্যামাসঙ্গীত আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। আবার সেই জেলাতেই মা দুর্গার পটচিত্র ফুটে ওঠে আজিজুলের মত শিল্পীর তুলিতে। বর্ধমানের দুবরাজদিঘির বাসিন্দা আজিজুল। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দেবদেবীর পটচিত্রের কাজ করছেন। সরাসরি জিজ্ঞেস না করলেও কোনও সমস্যা হয় না? এই প্রশ্নে হেসে ফেলেন শিল্পী। বলেন, “শিল্পীর আবার সমস্যা কী। আমি শিল্পী, ছবি আঁকতে ভালবাসি, তাই পটচিত্র আঁকছি।” এখানকার আর এক শিল্পী পার্থসারথী মণ্ডল জানান, লাল্টু স্মৃতি সংঘের থিম পটচিত্র। তারই কাজ করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “করোনাকালে সকল লোকশিল্পীই সঙ্কটে পড়েছেন। যাঁরা ঐতিহ্যকে বহন করেন সেই সব শিল্পীদের রক্ষা করতে পারলে ঐতিহ্যও রক্ষা পাবে। তাই পটশিল্পকে আমরা এবারের থিম করেছি। কলকাতা বা মেদিনীপুর থেকে শিল্পী এনে বর্তমান পরিস্থিতি সম্ভব নয়, তাই স্থানীয় শিল্পীরাই এখানে কাজ করছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.