ধীমান রায়, কাটোয়া: বিজয়া দশমীর রাত ছিল বর্ষণমুখর। প্রকৃতি বাদ সাধায় একাদশীর সকালে যৌথ শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা নিরঞ্জন হল পুর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বারোসতীর ডাঙায়। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম মিলে এই পুজো কার্নিভ্যাল এলাকার এক পরম্পরা। প্রায় ২০০ বছরের পুরানো সেই ঐতিহ্য মেনেই এবছরেও বুধবার যৌথ শোভাযাত্রা হল আউশগ্রামের বারোসতীর ডাঙায়। আর এই যৌথ ভাসান ঘিরে আবেগে ভাসলেন আপামর গ্রামবাসী।
আউশগ্রামের উত্তর রামনগরের বারোসতীর ডাঙায় এই যৌথ শোভাযাত্রাকে ভাসানমেলা বলেন এলাকাবাসী। বহু বছরের পরম্পরা মেনে আশপাশের গ্রামের প্রতিমা কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় বারোসতীর ডাঙায়। সেখানে একে অপরের সঙ্গে বিজয়ার সৌহার্দ্য বিনিময় করেন। ঢাক-ঢোল-কাঁসর ও নানান বাজনা বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসে মাতেন গ্রামবাসীরা। তারপর ফের যে যার প্রতিমা নিজেদের গন্তব্যে নিয়ে গিয়ে নিরঞ্জন করে। এটাই এলাকার রেওয়াজ।
আউশগ্রামের উত্তর রামনগরের বারোসতীর ডাঙা নিয়ে প্রচলিত রয়েছে এক জনশ্রুতি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, উত্তর রামনগরের এই ডাঙায় আগে একটি উঁচু ঢিবি ছিল। প্রাচীনকালে সেই ঢিবিতেই সতীদাহ হত। শোনা যায়, এই ডাঙাতেই ১২ জন সতীকে দাহ করা হয়েছিল। সেই থেকে এই উঁচু ফাঁকা জায়গাটি বারোসতীর ডাঙা নামে পরিচিত। যদিও এনিয়ে মতান্তরও রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রামনগর, গোস্বামীখণ্ড, মল্লিকপুর, খটনগর, হাটমাধবপুর, গোপালপুর কলোনি প্রভৃতি গ্রাম মিলে পারিবারিক ও সর্বজনীন পুজো হয় প্রায় ১৫টি। বুধবার সকালে ওই সমস্ত গ্রামের বেশ কয়েকটি প্রতিমাকে নিয়ে আসা হয় বারোসতীর ডাঙায়। বারোসতীর ডাঙা হাজারো মানুষের ভিড়ে মিলনমেলায় পরিণত হয়। এই শোভাযাত্রা দেখতে আবালবৃদ্ধবনিতা ভিড় করেছিলেন। ঢাক কাঁসরের আওয়াজে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। চলে সিঁদুরখেলা। প্রত্যন্ত গ্রামের পুজো কার্নিভ্যাল নিয়ে মেতে ওঠেন আউশগ্রামবাসী।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.