শুভময় মণ্ডল ও তিয়াসা সরকার: কাশীর দশাশ্বমেধ ঘাটে মুক্তির পথ খুঁজে পাবে বউবাজারের স্যাঁকরা পাড়ার বাসিন্দারা। গঙ্গারতি দর্শনে পাবে ভিটে হারানোর যন্ত্রণা থেকে লাঘব। নেবে নতুন করে শুরু করার অঙ্গীকার।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য তাসের দেশে পরিণত হয়েছে মধ্য কলকাতার বউবাজার অঞ্চল। মাটি আলগা হয়ে একের পর এক ভেঙে পড়ছে বাড়ি। বউবাজারের দুর্গা পিতুরী লেন, স্যাকরা পাড়া এখন হয়ে উঠেছে অভিশপ্ত পুরী। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। পুজোর আগে ভিটে ছাড়া হওয়ার বেদনায় ক্লিষ্ট বাসিন্দারা। সেইসঙ্গে দাঁড়ি পড়েছে অর্ধশতক ধরে হয়ে আসা দুর্গাপুজোয়। বাড়ি ধসের কারণে এবছরই বউবাজারের স্যাঁকরা পাড়ার পুজো বন্ধ। মুখ ভার বাসিন্দাদের। তাতে কী, এবার তাঁরা পাশে পেলেন শহরের এক অন্য পুজো কমিটিকে। জগৎ মুখার্জি পার্ক দুর্গাপুজো কমিটি বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে স্যাঁকরা পাড়ার বাসিন্দাদের।
জানা গিয়েছে, জগৎ মুখার্জি পার্কের মণ্ডপেই পুজোর কটাদিন আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন স্যাকরা পাড়ার বাসিন্দারা। মেট্রোর কাজের জন্য বউবাজারের বেশ কয়েকটি পরিবারের পাড়ার পুজো এবার আর হচ্ছে না। ৫৬ বছরের পুরনো এবার বন্ধ হল। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ পাড়ার আট থেকে আশির। কিন্তু তাদের পুজোর মজা দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে জগৎ মুখার্জি পার্ক। সপ্তমী থেকে দশমী, প্রত্যেকদিনই মণ্ডপে পুজো কমিটির সদস্যদের মতোই থাকবেন তাঁরা। অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলিই হোক বা নবমীর ভোগ, কিংবা দশমীর সিঁদুর খেলা। সবেতেই অংশীদার হবেন স্যাকরা পাড়ার বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, জগৎ মুখার্জি পার্ক এবং স্যাকরা পাড়া দুর্গোৎসব কমিটির যৌথ সদস্য ব্যাচও তৈরি করা হচ্ছে পুজোর দিনগুলির জন্য।
অন্যতম উদ্যোক্তা, গৌতম সরকার বলেন, ‘পুজো কমিটির তরফে আমরা গিয়ে স্যাকরা পাড়ার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। পুজোর কটাদিন তাঁদের পরিবারের মতোই আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন আমাদের মণ্ডপে। যৌথ ব্যাচও তৈরি হচ্ছে। তাঁদের মন খারাপের কোনও কারণ নেই। আমরা রয়েছি ওদের পাশে। পুজোর আনন্দ মাটিতে মিশতে দেব না। ওঁদের স্যাকরা পাড়ার পুজোর আরতি হবে জগৎ মুখার্জি পার্কের মণ্ডপেই।’ প্রসঙ্গত, এবার ৮৩তম বর্ষ জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজোর। এবছর তাদের থিম কাশীর দশাশ্বমেধ ঘাট। শিল্পী সুপ্রতিম সরকারের ভাবনায় বারাণসীর অন্যতম দর্শনীয় এই ঘাটের পরিবেশই উঠে আসবে পুজো মণ্ডপে। মৃৎশিল্পী নবকুমার পালের প্রতিমার সামনে কাশীর ঐতিহ্যবাহী গঙ্গারতি উপলব্ধি করবেন দর্শনার্থীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.