শুভময় মণ্ডল: এই ফোরজি, অত্যাধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে আমরা এক ভয়ংকর সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে! যা গোটা মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যেতে পারে। আধুনিকতার আঙ্গিকে নিজেকে পুরোপুরি আধুনিক করতে গিয়ে আমরা অজান্তেই চরম বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে। আজকের দিনে প্রতিনিয়ত এক প্রতিযোগিতার আসক্তি নিয়ে এগিয়ে চলতে গিয়ে নিজেদের বদঅভ্যাসের মাশুল খুব শীঘ্রই আমাদের গুনতে হবে। সব জেনেবুঝেও আমরা সচেতন হচ্ছি না। জ্বলন্ত সেই সমস্যার নাম পানীয় জল। যা আজ নিঃশেষের মুখে।
ঐতিহ্যের বাহক হয়েও নিজেদের অজান্তেই আমরা নিজেদের ঐতিহ্যের মূলে কুঠারাঘাত করছি না তো? জ্ঞানত বা অজান্তে আমরা আমরা সভ্যতাকে বিনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছি না তো? এই সমস্ত মনের কোণের অজান্তে থাকা ভাবনার উদয়ের লক্ষ্যে উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা সর্বজনীন এই বছর তাদের ৮০তম বর্ষে অজান্তে অবচেতনে থাকা এক সমাজ সচেতনতার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। আর প্রতিবছর মায়ের আগমন ঘটে অশুভ শক্তির নাশ করে শুভ শক্তি প্রদানের জন্য। তাই এবছরও অজান্তে হওয়া অসচেতনতা যাতে মায়ের আশীর্বাদে সচেতনতায় পরিবর্তিত হয় সেই প্রয়াসই নিয়েছে আহিরীটোলা সর্বজনীন। সৃজনে শিল্পী তন্ময় চক্রবর্তী।
যথেচ্ছাচারে জল অপচয় বন্ধ করার তাগিদ যাতে অজান্তেও মানুষের ভাবনায় স্থান পায় তারই সূক্ষ প্রয়াসে এবছর তাদের মণ্ডপ গুজরাটের পাটনের বিখ্যাত ‘রানি কী ভভ’-এর আদলে তৈরি হচ্ছে। ‘রানি কী ভভ’ সরস্বতী নদীর তীরে অবস্থিত একাদশ শতাব্দীর তৎকালীন রানি উদয়মতীর তৎপরতায় ৭টি ধাপে নির্মিত বৃহদাকার এই নির্মাণটি জল সংরক্ষণের এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। বর্তমানে এর আদলে নির্মিত মণ্ডপের ভাবনায় সমাজের কাছে, মানুষের কাছে উদ্যোক্তাদের বার্তা -অজান্তেও জল অপচয় বন্ধ হোক, জল সংরক্ষণ শুরু হোক। ‘রানি কী ভভ’-এর আদলে তৈরি মণ্ডপে ঢুকলে সেই একাদশ শতাব্দীতে পৌঁছে যাবেন দর্শনার্থীরা। প্রত্যক্ষ করবেন, কীভাবে সেই সময় জল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিল রানি।
এছাড়াও চমক রয়েছে প্রতিমায়। এবার পাথরের তৈরি মাতৃপ্রতিমা থাকছে মণ্ডপে। ওড়িশায় তৈরি হওয়া এই মূর্তি ওজনে প্রায় ২ টন। একটা গোটা পাথর কেটে তৈরি হয়েছে প্রতিমা। সৃজনে শিল্পী স্বপন কুমার জানা। পাথরের তৈরি প্রতিমা নিঃসন্দেহে পুজোর শহরে অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে। সৌজন্যে আহিরীটোলা সর্বজনীন।
কেমন চলছে পুজো প্রস্তুতি, দেখুন ভিডিওয়-
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.