পুজোর সেকাল-একাল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভরেছে স্মৃতির পাতা। শরৎ এলেই তাতে চোখ রাখেন। কেমন ছিল তাঁদের কৈশোর, যৌবনের পুজো? সেসব ভাগ করে নিতে কলম ধরলেন সমাজের বিশিষ্টরা। ‘পুজোর প্রেম’ নিয়ে লিখলেন ব্রাত্য বসু।
ঠাকুর দেখতে যাওয়া, খাবার-দাবার, পাড়ার কমবয়সি মেয়ে, সিনেমা দেখতে যাওয়া বা থিয়েটার করায় আমার আগ্রহ থাকলেও যদি পুজোর প্রথম প্রেম বলতে হয়, সেটা হচ্ছে পুজোর কিশোর শারদীয়া সাহিত্যগুলো হাতে পাওয়া।
এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল কবে আমার হাতে দেব সাহিত্য কুটিরের ওই অপূর্ব বইগুলো আসবে। সেসব চমৎকার বই। কোনওটার নাম ছিল নীহারিকা, কোনওটার নাম বলাকা, কোনওটার নাম উদ্বোধন। অদ্ভুত সব বাঁধাই আর পুজোর গন্ধ পাওয়া বই পুজোর আগে যখন হাতে আসত প্রথমেই পড়ে নিতাম বগলা মামার গল্প। যেটা প্রত্যেক পুজো সংখ্যায় দেব সাহিত্য কুটির বের করত। তারপর বিধায়ক ভট্টাচার্যর নাটক। তার প্রধান চরিত্র ছিল অমরেশ। দারুণ দারুণ কার্টুন থাকত। আরও পরের দিকে একটা জিনিস খুব বাধ্যতামূলকভাবে থাকত সেটা হচ্ছে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাধু কালাচাঁদের গল্প। সেটাও ছোটবেলায় খুব তারিয়ে তারিয়ে পড়তাম। সেখানে একটা কার্টুন মনে আছে ‘মৎস্য ধরিব খাইব সুখে’। দেব সাহিত্য কুটিরের কোনও বইয়ে এটাই আমার দেখা প্রথম কার্টুন। বাবা এগুলো দেওয়ার কথা সব বলে রাখতেন। বাড়িতে এসে দিয়ে যেত একজন। আরও আসত আনন্দমেলা, সন্দেশ বা কিশোর ভারতী।
এখন খুব কম বেরোয় সন্দেশ। সে সময় নিয়মিত বেরোত। এগুলোর মধ্যে আমার খুব প্রিয় ছিল ময়ূখ চৌধুরির ছবিতে গল্প। আর লেখা। যেমন আত্তিলিও গোত্তি বা সংখ্যার নাম চার। এগুলোর কোনও তুলনা হয় না। বয়স তখন ৬, ৭, ৮। বালক বয়স। থিয়েটার আরও অনেক পরে। এটাই আমার প্রথম প্রেম। পুজো মানে আমি বুঝতাম কবে শারদ সাহিত্য বাড়িতে আসবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.