১৬ বছর ধরে বন্ধ পড়ে রয়েছে সহিস বাড়ির এই মন্দির।
দেবব্রত দাস, খাতড়া: এই পুজোর ছত্রে ছত্রে স্বপ্নের লোককথা। স্বপ্নে যদি দেবী দেখা দেন, তাহলেই পুজো হয়। আর স্বপ্নে দেবী দর্শন না হলে পুজোও বন্ধ। এমনই স্বপ্নময় ইতিকথা লুকিয়ে রয়েছে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল রানিবাঁধের সহিস পরিবারের দুর্গা প্রতিমাকে ঘিরে। এই দেবীর স্বপ্নে আগমন। স্বপ্নে দেখা দেবীর পুজো হয় নির্ঘণ্ট মেনেই। কিন্তু, গত ১৬ বছর ধরে স্বপ্নে দেখা দেননি দেবী! তাই পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
রানিবাঁধের কালীতলা থেকে বেথুয়ালা যাওয়ার রাস্তায় তাঁতিপাড়া। ওই পাড়ার সহিস পরিবারের দুর্গাপুজো এক সময় রানিবাঁধের প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। সহিস বাড়ির পুজো প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পাড়ার একচিলতে টিনের ছাউনি দেওয়া মন্দিরে পুজো হত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সহিস পরিবারের পূর্বপুরুষ রথু সহিস এই পুজো শুরু করেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পুজো চালিয়েছেন তিনি। এরপর রথুবাবুর বড়ছেলে ফণিভূষণ সহিস প্রায় ৪০ বছর পুজো করেছেন। তারপরেই পুজোয় ছেদ পড়ে।
প্রাচীন এই পুজো কেন বন্ধ?
সহিস পরিবারের বর্তমান বংশধর ফণিভূষণবাবুর বড় ছেলে রবীন্দ্রনাথ সহিস জানিয়েছে, “আমাদের এই বাড়ির পুজো নিয়ে একটু অন্যরকম ইতিহাস রয়েছে। বাবার মুখে শুনেছি, আমার দাদু রথু সহিস স্বপ্নে দেবীর দর্শন পান। তারপরেই তিনি পুজো শুরু করেন। বাড়ির পাশেই টিনের ছাউনি দিয়ে মন্দির তৈরি হয়। প্রতি বছর স্বপ্নে দেবী দর্শন পেয়ে প্রতিমা পুজো করা হত। আমার বাবাও স্বপ্নে দেবী দর্শন পাওয়ার পরেই পুজো করেছেন।” ফণিভূষণবাবুর ছোট ছেলে লক্ষীকান্ত সহিস বলেন, “বাবা মৃত্যুর আগে আমাদের বলে গিয়েছিলেন, দেবী যদি স্বপ্নে দেখা দেন তবেই পুজো করবি। না হলে বাড়ির অমঙ্গল হবে। তাই বাবার মৃত্যুর পর থেকে আর প্রতিমা পুজো করিনি। পুজো বন্ধ।” কেমন ছিল সেকালের পুজো? রথুবাবুর ছেলে আদিত্য সহিস বলেন, “সন্ধিপুজোর সময় প্রতিমার ঘটে ফুল চাপানো থাকত। ফুল পড়লে তবেই বলি শুরু হত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.