ছবি: অরিজিৎ সাহা
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন এস বি পার্ক সর্বজনীনের পুজো প্রস্তুতি৷
শুভময় মণ্ডল: অগ্নিতেই এবার শুদ্ধ হবে শহরের পুজো। থিমপুজোর লড়াইয়ের এবছর অভিনবত্বের জোয়ার। সেখানে প্রতিবারই নতুনত্ব চমক দেয় ঠাকুরপুকুরের এস বি পার্ক সর্বজনীন। এবছরও তার অন্যথা হচ্ছে না দক্ষিণের এই হেভিওয়েট পুজোর মণ্ডপে। শিল্পী পার্থ দাশগুপ্তর ভাবনা ও সৃজনে গড়ে উঠছে পুজোমণ্ডপ। এবছর তাদের থিম ‘অগ্নিশুদ্ধি’। দুর্গাপুজোকে অন্য আঙ্গিকে দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরতে কোমর বেঁধেছেন শিল্পী। অগ্নিশুদ্ধি করে মাটিকেই বিভিন্ন রূপে মণ্ডপসজ্জায় তুলে ধরছেন তিনি।
[মায়ের হাত ধরে শৈশবে ফিরতে এবার গন্তব্য হোক টালা বারোয়ারি]
কী এই অগ্নিশুদ্ধি এবং কেন এমন ভাবনা শিল্পীর? ঠাকুরপুকুরের এই মণ্ডপে এলেই বুঝতে পারবেন কী বিরাট কর্মযজ্ঞ হয়েছে এখানে। কর্মযজ্ঞ কারণ, যে কোনও যজ্ঞের প্রধান বস্তু হল অগ্নি। আর সেই অগ্নিতেই শুদ্ধ হয়েছে গোটা মণ্ডপ। প্রচুর ইট ব্যবহার করেছেন শিল্পী। যার মধ্যে ৭০ হাজার ইট থাকছে মণ্ডপের উপরিভাগে এবং মণ্ডপের ভিতে থাকছে আরও ২২ হাজার সংগ্রহ করা ইট। সংগ্রহ করা কেন, তা ক্রমশ প্রকাশ্য। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, তিনটি কথা সব ইটগুলিতে লেখা রয়েছে। শ্রী দুর্গা মা, ১৪২৫ এবং এস বি পার্ক। পুজোর উপলক্ষ্য, সময় এবং স্থান, এই তিনটি বিষয় ইটের মধ্যে দিয়েই বলে দিচ্ছেন শিল্পী তাঁর থিমের মধ্যে দিয়ে। এই ইটের অধিকাংশই ইটভাটায় গত তিন মাস ধরে তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপে আরও থাকছে ১৩টি চুল্লি। মণ্ডপের ১৩টি অংশে এই চুল্লিগুলি থাকছে। মণ্ডপের সমস্ত সামগ্রী এই চুল্লিগুলিতে অগ্নিতে শুদ্ধ হয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। মণ্ডপে ঢুকলেই দর্শনার্থীদের কাছে খোলসা হবে, কীভাবে মণ্ডপ ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে।
[প্রকৃতি আজ বিপন্ন, পুজোয় ভূমি সংরক্ষণের বার্তা বেহালা নূতন সংঘের]
সংগ্রহ করা ইটের পিছনেও একটি ইতিহাস রয়েছে। শিল্পী জানিয়েছেন, সংগৃহীত ইটগুলি খুঁজতে গিয়েও বহু প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছেন শিল্পী পার্থবাবু। তাঁর ভাষায়, ইটও কথা বলে। এছাড়াও মণ্ডপে অনেক সেরামিকের সামগ্রী থাকছে। যা এই চুল্লিগুলিতেই পুড়িয়ে তৈরি করা হয়েছে। আরও একটি চমক হল প্রতিমা। এবার এই পুজোর প্রতিমায় যে বৈশিষ্ট্য তা সম্ভবত কলকাতার পুজোয় প্রথম। তা মণ্ডপে গেলেই চাক্ষুষ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী নিজেই। এছাড়াও মণ্ডপসজ্জায় পার্থ দাশগুপ্তকে সাহায্য করেছেন গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজের তিন শিক্ষার্থী। তাঁরা একইসঙ্গে ইন্টার্নশিপ করছেন এই মণ্ডপে কাজের মাধ্যমে। কলকাতার পুজোর ইতিহাসে এটাও প্রথম। হবু শিল্পীদের মণ্ডপে কাজ করা ইতিহাসে লেখা থাকবে বলে বিশ্বাস উদ্যোক্তা সঞ্জয় মজুমদারের। মণ্ডপে থাকছে মধ্যপ্রদেশের মাইহার ব্যান্ডের সংগীতায়োজন। গতবছর শিল্পী ভবতোষ সুতারের ভাবনায় মানুষের আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ার কাহিনি বলেছিল এস বি পার্ক সর্বজনীন। এবছর অগ্নিতে শুদ্ধ হয়ে দর্শনার্থীদের কতটা মোহিত করতে পারে মণ্ডপ সেটাই দেখার।
[দমদম পার্ক ভারতচক্রে দেবীর সঙ্গে এবার বন্দিত হবেন সমাজের দশভুজারা]
[বই পড়তে ভালবাসেন? পুজোয় আস্ত লাইব্রেরি নিয়ে অপেক্ষায় এই মণ্ডপ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.