নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ায় নবনীতা দেবসেন।
দুর্গাপুজো বলতেই যে বিষয়টা প্রথম আমার মনে আসে, তা হল স্বাধীনতা। ছেলেবেলায় রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছি। বছরের বাকি দিনগুলোতে একা বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। কিন্তু দুর্গাপুজোর ওই ক’টা দিন বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখার অনুমতি দিত বড়রা। তখন নিজেকে মুক্ত বিহঙ্গের মতো মনে হত। মনে হত, এই বুঝি বড় হয়ে গেছি আমি। বন্ধুরা মিলে কত ঠাকুর দেখতাম। ঘুরতাম। খেতাম। আনন্দ, হই হুল্লোড়ে কীভাবে যে পুজোর চারদিন কেটে যেত, মালুম হত না।
[ আমার দুগ্গা: কাঠামো বাঁধার দিন থেকেই পুজোর শুরু ]
অবশ্য খুব বেশিদূর নয়, বাড়ির কাছাকাছি প্রতিমাগুলোই দেখতাম বন্ধুদের সঙ্গে। তখনও প্রচুর ভিড় হত। মনে পড়ে, ভিড়ে হারিয়ে গেলেই মাইকে নাম ধরে অ্যানাউন্সমেন্ট হত। হারিয় যাওয়ার ভয়ে শক্ত করে বাবা-মার হাত ধরে রাখতাম। আর অবাক বিস্ময়ে সুন্দর সুন্দর সব প্রতিমা দর্শন করতাম। সেই সময় যদিও বড় পুজো প্যান্ডেল নয়, মা দুর্গাই মূল আকর্ষণ। বাগবাজার, কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক-এর মতো পুজোগুলোর মাতৃ প্রতিমা দেখার আলাদা অনুভূতি ছিল। পুজোর চারদিনের জন্য চারটে জামা হত। পুজোর সময় মেলা দেখার অন্য অনুভূতি ছিল। বাড়ির কিছুটা দূরে মেলা বসত। ফেরিওয়ালারা কত রকমের জিনিস ফেরি করত। সেসব কেনারও এক অদ্ভুত মজা ছিল। বলতে গেলে, সারা বছরের খেলনা পুজোর সময় কেনা হয়ে যেত। পুজোর আরেকটি সুখস্মৃতি হল বাড়িতে তৈরি হরেক পদের মিষ্টি।
[ আমার দুগ্গা: বিজয়া মানেই লোভনীয় সব মিষ্টি-নাড়ু ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.