Advertisement
Advertisement

এই বাড়িতে মা দুর্গা খেয়ে ফেলেন পুরোহিতের কিশোরী কন্যাকে, কেন জানেন?

পঞ্চমীর দিনেই পেটকাটি দুর্গা দেখতে ভক্তের ঢল।

Murshidabad:  Banerjee’s Durga puja has an interesting story

ছবিতে রঘুনাথগঞ্জের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পেটকাটি দুর্গা।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:October 14, 2018 3:43 pm
  • Updated:October 14, 2018 3:43 pm  

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে  হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল  গদাইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা:  মুর্শিদাবাদের অধিকাংশ বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোকে ঘিরে ইতিহাসের হাতছানি। জড়িয়ে আছে অনেক লোককথাও। রঘুনাথগঞ্জের গদাইপুরের পেটকাটি দুর্গাকে ঘিরে আছে বহু প্রাচীন ইতিহাস। প্রায় ৪০০ বছর পেরিয়ে এসেছে গদাইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো। ইতিহাসের স্রোতে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে পেটকাটি দুর্গা আজ সর্বজনীনে পরিণত হয়েছে। এখানে দেবী জাগ্রত। তাই দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতে। পঞ্চমীতে তাই সকালে থেকেই দেবী দর্শনে ভিড় জমেছে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। পেটকাটি দুর্গার এমনই মাহাত্ম্য যে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির ঠাকুরের কাঠামোয় আগে মাটি পড়ে। তারপর জঙ্গিপুরের অন্যান্য বনেদি বাড়ির দেবীর কাঠামোতে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়।

Advertisement

রঘুনাথগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে আহিরণ। ঠিক তার পাশের গ্রাম গদাইপুর। গ্রামের পাশ থেকে বয়ে গিয়েছে আখরি নদী। এই নদীর তীর থেকে মাটি এনেই দেবী মূর্তি গড়া হয়। বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গা ন’ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১৩ ফুট প্রস্থের। প্রতি বছর একই মাপের মূর্তি গড়া হয়। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে এই দুর্গা পুজোর সূচনা হয়। কথিত আছে সেই সময় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন ছিল। তাই দুর্গাপুজোর দেখভালের জন্য এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ নিয়োগ করা হয়। সেই  পুরোহিত তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের মন্দিরের পাশে বসবাস করতেন। একবার দুর্গাপুজোয় সন্ধি পুজোর সময় পুরোহিত কন্যা পুজোর জোগান দিচ্ছিল। আচমকা কিশোরীটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে সস্ত্রীক দেবীর কাছে হত্যে দেন পুরোহিত। মা দুর্গা সেই রাতেই তাঁদের স্বপ্নে দেখা দেন।  জানান, মেয়ের রূপে মুগ্ধ হয়ে তিনি লোভ সামলাতে না পেরে গিলে ফেলেছেন। পুজোয় ছাগ বলি দেওয়ার পর তাঁর পেট কেটে মেয়েটিকে উদ্ধার করার নির্দেশ দেন। স্বপ্নে দেওয়া দেবীর নির্দেশে মতো দুর্গার পেট কেটে জীবন্ত কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দেবী পেটকাটি দুর্গা নামে লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে।

[এবার পুজোয় আপনিও দুর্গা কিংবা অসুর, জানেন কীভাবে?]

পেটকাটি দুর্গা মন্দিরের পিছনে রয়েছে একটি পুকুর। দূরদূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা পুজোর সময় দেবী দর্শনে আসেন। অনেকে পুকুরে স্নান করেন। পুজো দেন। দশমীর দিন আখরি নদীতে নৌকায় চাপিয়ে দেবীকে নিয়ে আসা হয় রঘুনাথগঞ্জের সদর ঘাটে। ভাগীরথী নদীর তীরে সদর ঘাটের দুই প্রান্তে মেলা বসে। সেখানে শহরের সমস্ত ঠাকুর আনা হয়। একাদশীর দিন বেলা এগারোটা নাগাদ পেটকাটি দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয় জঙ্গিপুর শ্মশান ঘাটে। তারপর পায়ে হেঁটে শহর পরিক্রমা করে গদাইপুরে দেবীর মন্দিরে ঘট পাতা হয়। এই পুজো ঘিরে ভক্তদের উৎসাহে এত বছরেও বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। এই পুজোর নেপথ্যে থাকা ইতিহাস ভক্তদের মনে গভীরভাবে দাগ কাটায় প্রতি বছর বহু দূর থেকেও দেবী দর্শনে ভক্তরা আসেন। পঞ্চমীর দিন থেকেই তাই বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে তিল ধারনের জায়গা নেই।

[পান্তা ভাতের সঙ্গে ইলিশ খাইয়ে উমাকে বিদায় জানান কবি যতীন্দ্রমোহনের পরিবার]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement