ছবিতে পুজোর সূচনার সেই তালপাতার পুঁথি, ছবি: জয়ন্ত দাস।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল কাটোয়ার ষষ্ঠীতলার গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজোর কথা।
ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রাচীন তালপাতার পুঁথি। তাই দেখেই দুর্গাপুজো করা হয় কাটোয়ার ষষ্ঠীতলার গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে। পুজোয় লাগে জোড়া ইলিশের ভোগ। প্রায় ৩৫০ বছর ধরে এই রেওয়াজ চলে আসছে। কাটোয়া শহরে সাবেকি দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির পুজো। পরম্পরা মেনে কাটোয়ার ছ’নম্বর ওয়ার্ডের ষষ্ঠীতলার গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ি আজও পুজোর আয়োজন করে।
এই পরিবারে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন উমেশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়। শোনা যায় স্বপ্নাদেশ পেয়েই পরিবারে দুর্গা আরাধনার শুরু করেছিলেন উমেশচন্দ্র। তিনপুরুষ ধরে গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে এই পুজো চলে এসেছে। তারপর বংশধর না থাকায় দৌহিত্র পরিবার পুজোর দায়িত্ব নেয়। পরিবারের শেষ উত্তরাধিকারী তারাপদ গঙ্গোপাধ্যায় ভাগনে ক্ষুদিরাম মুখোপাধ্যায়কে কালনা থেকে কাটোয়ায় নিয়ে আসেন। পারিবারিক সম্পত্তির পাশাপাশি পুজোর দায়িত্বও যায় ক্ষুদিরামের কাঁধে। সেই থেকে ক্ষুদিরামের বংশধরেরা পুজো করে আসছেন। বর্তমানে মুখোপাধ্যায় পরিবার দায়িত্ব নিলেও আজও গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত।
এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য পুরনো আমলের তালপাতার পুঁথি দেখেই পুজো হয়। দেবীকে নবমীর দিন জোড়া ইলিশের ভোগ দিতে হয়। কাটোয়ার জেলেপাড়ার একটি পরিবার ওই ইলিশ মাছ দিয়ে যায়। বংশ পরম্পরায় একই জেলে পরিবার থেকে গঙ্গোপাধ্যায় বাড়িতে জোড়া ইলিশ আসছে। শাক্তমতে পুজো হয়। তাই বলিদানের প্রথা রয়েছে। প্রথা মেনে অষ্টমীর দিন মন্দিরের সামনে সিঁদুর বিছিয়ে রাখা হয়। পারিবারিক বিশ্বাস, বিছিয়ে রাখা সিঁদুরের উপরে দেবীর পায়ের ছাপ পড়ে। পারিবারিক পুজো হলেও এই পুজো দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ ভিড় করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.