ছবিতে ভট্টাচার্য বাড়ির তালপাতার পুঁথি, ছবি: দেবাশিস ভট্টাচার্য।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল কোচবিহারের ভট্টাচার্য পরিবারের দুর্গাপুজোর কথা।
বিক্রম রায়, কোচবিহার: তালপাতায় বর্ণিত শতাব্দীপ্রাচীন পুঁথির মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে যায় কোচবিহারের ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো। মহালয়া আসতে আর মাত্র সাতদিন বাকি। ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গা আরাধনা শুরু হতেও বাকি ওই সাতদিনই। কেননা মহালয়ার দিন থেকেই উমা আরধনায় মাতে গোটা পরিবার। প্রতিপদে দেবীর ঘট স্থাপন করা হয়। ষষ্ঠীর দিন বেলগাছের নিচে বেল বরণ পুজো করা হয়। তাই দেবীর আগমনকে ঘিরে কোচবিহারের ভট্টাচার্য বাড়িতে এখন থেকেই সাজসাজ রব।
ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো এবার ৩৫৩ বছরে পড়ল। ওপার বাংলার উলিপুরে ভট্টাচার্যদের আদি নিবাস। সেখানকার ভিটেতেই দুর্গা আরাধনার সূচনা হয়েছিল। তবে দেশভাগের অনেক আগেই ভট্টাচার্যরা কোচবিহারের ধর্মতলাতে চলে আসেন। সেখানেই তৈরি হয় নতুন বাড়ি, নাম রমেন্দ্রভবন। সেই বাড়িতেই তারপর থেকে পুজো হচ্ছে। ভট্টাচার্যদের ২৩ প্রজন্ম এখনও পর্যন্ত মায়ের আরাধনায় শামিল হয়েছে। পুজোর বিধিনিয়মেও ভিন্নতা রয়েছে। নবমীতে জোড়া পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। তবে বলি প্রদত্ত পাঁঠার একটি অবশ্যাই সাদা রঙের হতে হবে। নবমীতে একই সঙ্গে চালকুমড়ো বলির রেওয়াজও রয়েছে। সপ্তমী অষ্টমীর দিনও একটি করে পাঁঠাবলি হয়। সপ্তমী থেকে নবমী মায়ের ভোগে থাকে শোল ও বোয়াল মাছের ঝোল। সেইসঙ্গে খিচুড়ি ও চাল বা কলার বড়াও দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই রমেন্দ্র ভবনের ঠাকুরদালান সাজতে শুরু করেছে। সপরিবারে উমা এলেন বলে। পুজোর বিশেষত্ত্ব প্রসঙ্গে এই পরিবারের সদস্য কল্যাণ ভট্টাচার্য (হরেকৃষ্ণ) জানান, তালপাতায় বর্ণিত শতাব্দীপ্রাচীন পুঁথির মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়েই শুরু হয় পুজো। পারিবারিক পুরোহিত বিজয় চক্রবর্তী এই পুজো করেন। তবে পরম্পরা মেনে পরিবারের এক সদস্যকে পুজোয় বসতে হয়। এবার সেই দায়িত্ব পড়েছে দুলাল ভট্টাচার্যের কাঁধে। প্রতিদিন চণ্ডীপাঠের সময় দেবীকে পঞ্চব্যঞ্জন অন্নভোগ দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.