ছবিতে কাঁতির মণ্ডলবাড়ির ভগ্নপ্রায় নাটমন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল কাঁথির মণ্ডলবাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।
রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: জমিদারি আজ আর নেই। জরাজীর্ণ অবস্থা দুর্গামন্দিরের। তবে নিয়ম মেনে পুজো চলছে কাঁথির মণ্ডল পরিবারে। সংস্কারের অভাবে জীর্ণ ও ভগ্নপ্রায় মন্দিরেই চলছে দেবী দুর্গার আরাধনা। পুজোর আয়োজন করতে করতেই অতীতের রাজকীয় স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান মণ্ডল পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের ঝাওয়া-মানরাউতবাড় গ্রামের বাসিন্দা মণ্ডলরা। জমিদার বাড়ির ঠাঁটবাট গেলেও ১১০ বছরের পুরনো পুজো কিন্তু রয়েই গিয়েছে। এলাকায় এখন দু’ভাইয়ের পুজো নামেই পরিচিত মণ্ডলবাড়ির দুর্গা আরাধনা।
পুজো এখনও টিমটিম করে চলছে। ভাই অমলেন্দু মণ্ডল ও বিমলেন্দু মণ্ডল সেই জমিদারি রীতি মেনে পুজোকে কোনওরকমে টিকিয়ে রেখেছেন দুই ভাই অমলেন্দু মণ্ডল ও বিমলেন্দু মণ্ডল। এখনও সেই নাটমন্দির রয়ে গিয়েছে। ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি যে কোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে পড়তে পারে। মন্দির গাত্রের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। অভাব অনটন গ্রাস করলেও আজ পর্যন্ত পুজোয় কোনও বিঘ্ন ঘটেনি। জমিদারি স্মৃতি ধরে রেখে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই পুজো করে আসছেন মণ্ডলবাড়ির দু’ভাই। এই এলাকায় প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে মণ্ডল পরিবারের পুজোই অন্যতম।
মণ্ডলবাড়ির পুজোর উদ্যোক্তা অমলেন্দু মণ্ডল জানান, তাঁদের পূর্ব পুরুষ ক্ষীরোদ মণ্ডল ও ধ্রূব মণ্ডলের আমলে দুর্গাপুজো শুরু হয়। পরবর্তীকালে ধ্রুব মণ্ডলের ছেলে অনন্ত ও যোগেন পুজোর আয়োজন করতেন। অনন্ত মণ্ডলের দুই ছেলে অমলেন্দু ও বিমলেন্দু। তাঁরাই এখনও পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন। আগে এই পুজোকে ঘিরে এলাকায় সাড়া পড়ে যেত। যাত্রা হত। বসত মেলাও। বহু মানুষকে পাত পেড়ে খাওয়ানো হত। তবে এখন সেসব ইতিহাস। মণ্ডলবাড়ির সদস্য অমলেন্দু মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘এখন আমরা কিছু জমিজমা চাষ করে তার উদ্বৃত্ত আয়ে পুজো চালিয়ে যাচ্ছি। অর্থাভাবে মন্দিরের সংস্কার পর্যন্ত করতে পারছি না। আমাদের বয়স বাড়ছে। আর কতদিন পুজো টিকিয়ে রাখতে পারব জানি না। তবে যতদিন বাঁচব, ততদিন পুজো করে যাব।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.