Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2023

গরদের শাড়িতে আমার মা যেন জ্যান্ত দুগ্গা! মাথার পিছনে আলোর বলয়

পদ্মফুল ভর্তি বারকোশ হাতে ফুলকাকিমা।

Durga Puja 2023: Memories of Durga Puja festival by sahana bhattacharya | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:October 18, 2023 9:33 pm
  • Updated:October 18, 2023 9:43 pm  

সাহানা ভট্টাচার্য: ”ওরে ওঠ এবার। সন্ধিপুজো সক্কালবেলায়, শিগগির প্যান্ডেল যা, ঠাকুরমশাই এসে গেছে।”

মা যখন স্নান সেরে লালপাড় সাদা শাড়ি আর কপালে বড় লাল টিপ পরে আমায় ঘুম থেকে তোলে, আমি তখন ভেবলে থাকি! এরকম সাজগোজ করলে টানাটানা বিশাল চোখ, বড় টিপ আর ফাঁদি নথওয়ালা আমার মাকে পুরো মাদুগ্গার মতন দেখায়! সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হল সদ্য স্নান সেরেই আসুক বা প্রচন্ড ঘেমে মাছ ভাজতে ভাজতে, মায়ের গায়ে সবসময় মা-মা গন্ধ! সামনে এরকম জ্যান্ত ‘দুগ্গা’ দেখে আমার নিজের একটা ‘বালগণেশ-বালগণেশ’ ফিল। আমি মায়ের দিকে হাত বাড়িয়ে প্রচন্ড আদুরে ঘড়ঘড়ে গলায় যেই না বললাম, “ও মাআআআ, অসুরটা কি ভালো লোকের মত দেখতে! চুলে হাইলাইট নেই, ফোলানো বাইসেপ ঢাকা ড্রেস পরা, ওরম অসুর মোটেই পছন্দ না।” অমনি মা বলল, “এই তোকে কি অসুরের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধ করতে বলা হয়েছে? এক্ষুণি উঠে চান করতে যা। আমার কাচা কাপড় ছুঁবি না, আলতা পরে আসছি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ২০ বছর ধরে বোনের চাকরি করছেন দিদি! বাম আমলের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে শোরগোল ভাতারে]

অগত্যা আদর বাতিল। নিজেকে ঝেড়েমুছে প্যান্ডেলে গেলাম। প্যান্ডেলের ভেতরে ঢুকে দেখি ঢাকিগুলো একপাশে বসে চা খাচ্ছে। এর পর সন্ধিপুজো চলবে লম্বা সময় ধরে। তাই ওদেরকে কমিটি থেকে চা দেওয়া হয়েছে। ছাদ থেকে বিশাল ঝাড়লণ্ঠনটা ঝুলছে। ঠাকুরমশাই কী সব মন্ত্র পড়ছেন আর তাঁকে ঘিরে আমার খুড়তুতো বোন, পাড়াতুতো বন্ধুরা। কেউ চন্দন ঘষছে, কেউ বেলপাতার মালা গাঁথছে। বিরাট পিলসুজটা রয়েছে একধারে। লাল বেনারসি পরা মা দুগ্গাকে বড় করে একটা প্রণাম করে পিলসুজের পাশেই আমি বসে গেলাম দুব্বো বাছতে।

প্যান্ডেলের একপাশের একটা ছোট্ট কাপড়ের পর্দা সরিয়ে হাতে পদ্মফুল ভর্তি বড় বারকোশ হাতে ঢুকল আমার ফুলকাকিমা। মাখনের মত গায়ের রং কাকিমার। আজ পুজোর দিনে তার পরনেও গরদ, বড় টিপ, নাকে নথ। সবটা মিলিয়ে কেমন দিব্য দিব্য ভাব! দুই ছেলে ও পোষা কুকুরের আবদার সামলে কাকিমা পেরে ওঠে না। আমায় দেখেই কাকিমা- “ও মা এটা কে গোওওওওও? কী সুন্দর সেজেছিস মামণি!” বলতে না বলতে জগজ্জননীর মতোন করে আমার মাতৃদেবীর আবির্ভাব প্যান্ডেলে। এখন তার সাজে যোগ হয়েছে হাতে সোনা বাঁধানো শাঁখার সঙ্গে মকরমুখ বালা এবং পায়ে আলতা। আমি আবার হাঁ, পুরো জ্যোতি দেখতে পাচ্ছি মায়ের মাথার পিছনে!

[আরও পড়ুন: হু হু করে বিকোচ্ছে গড়পঞ্চকোটের কাঠের দুর্গা, বিপুল লক্ষ্মীলাভ শিল্পীর]

ঠিক সময়েই ঢাকের শব্দটা ফোনের এলার্মের মতো বাজতে লাগল। ঘুম ভেঙে দেখি ঘড়িতে ভোর চারটে বাজতে দশ। একলাফে বিছানা থেকে নেমে ব্রাশ করে ফিরে এসেই খাটের পাশে খুলে রাখা ল্যাপটপে সেট করে রাখা অডিওতে ক্লিক করে সুটকেশ গোছাতে বসলাম আমি। ঠিক গুনেগুনে ছিয়াশি ঘণ্টা পরেই তো কলকাতার মাটি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইমে বলে চললেন “আশ্বিনের শারদপ্রাতে …..।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement