Advertisement
Advertisement

Breaking News

পূজোবার্ষিকী মানেই হাঁদাভোঁদা, নন্টেফন্টে, কোথায় গেলেন কমিকসের জাদুকর!

পুজোর প্রথম গন্ধ পেতাম পূজোবার্ষিকীর পাতায়।

Durga Puja 2023: Memories of durga puja festival by Ankur Dutta | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:October 19, 2023 6:16 pm
  • Updated:October 19, 2023 6:20 pm  

অঙ্কুর দত্ত: দুর্গাপুজোর (Durga Puja) আগে যখন স্কুলে ছুটি পড়ত, তখনই বোধহয় শেষবারের মতো জীবনে ‘পুজো’ এসেছিল। রূপকথার গল্পের ফাঁক দিয়ে বড়দের কাছে আবদার করতাম, ‘আর ছোট থাকতে ভালো লাগছে না, আমায় একটু বড় করে দাও না!’ সেদিন আমরা কেউ বুঝিনি, বড় হওয়াটা ঠিক কিরকম, সত্যিই চাইবার মতো কি? বড় হলে পাড়ার প্যান্ডেলের সামনে দাঁড়িয়ে ক্যাপ-বন্দুক ফাটানো যায় না, মনের সমস্ত আনন্দ উযার করা যায় না। 

বাবা মায়ের হাত ধরে, প্যান্টের ভিতরে নতুন কেনা জামা গুঁজে, বন্দুক হাতে নিয়ে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা ছিল, ফুচকা কিংবা রোল খাওয়ার আকর্ষণও ছিল। তারপর বহু পুজো কেটে গেছে। চোঙা-ডিজে বক্স, হলুদ কাগজ মোড়ানো বাল্ব, সবুজে মোড়া টিউব ডিঙিয়ে এলইডি এসে গিয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে। এখন আলো অনেক বেশি কিন্তু মণ্ডপের ধারে ফোন ঘাঁটতে থাকা মানুষের ভিড়, গ্রাস করেছে আধুনিকতার অন্ধকার যাপন। তখন এক ধরনের বেলুন পাওয়া যেত পুজোর মেলায়। ছোট লাল রঙের, গোলাকৃতির। এক অদ্ভুত মায়াবী শব্দ হত। আমরা মফসসলের ছেলেপিলেরা ওই আনন্দ ছোঁয়ার জন্যে আকাশের দিকে হাত বাড়াতাম! কিন্তু ছোঁয়া যেত না। আমরা জীবনে যা এবং যাদের ছুঁতে পারি না, তাই ও তারাই মনে থেকে যায়। ছেলেবেলার মতো!

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভ্রাম্যমাণ ট্রামেই দেবীর আরাধনা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পুজোয় শামিল রূপান্তরকামীরাও]

পুজোর সময় নতুন গানের আকর্ষণ ছিল। যার জন্য অপেক্ষা থাকত গোটা বছর। ফিতের ক্যাসেট/সিডিতে আট-দশটা নতুন গান। ওই বাদামি ফিতেটাই যেন বিকেল রঙের রামধনু ছিল জীবনের। একটা গানের পর নতুন কী গান বাজবে, শোনার জন্য সে কী কৌতূহল! সেই আনন্দ কোনও অডিও প্ল্যাটফর্ম দিতে অক্ষম। মহালয়ার পর থেকেই থেকেই সদ্য মুক্তি হওয়া ছবির গান, পাড়ায় পাড়ায় ঘোরা দোকানের বিজ্ঞাপনের মাঝে বাজত। ওরা বুঝিয়ে দিত, পুজো আসছে।

যদিও পুজোর প্রথম গন্ধ পেতাম পূজোবার্ষিকীতে। পাতায় পাতায় নানা রঙের কমিকস, প্রচ্ছদের ছবি। সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড আয়োজন। বাবা যেদিন নিয়ে আসতেন নতুন পূজোবার্ষিকী, সেদিন সব ভুলে শুধু হাত বোলাতাম ঝকঝকে নতুন পাতায়। গন্ধ নিতাম। আজকের ছোটবেলায় শুকতারা নেই, নন্টেফন্টে নেই। আর এই সেদিন তো হাঁদাভোঁদাকে নিয়ে চলে গিয়েছেন খোদ বাংলা কমিকসের জাদুকর নারায়ণ দেবনাথ।

[আরও পড়ুন: ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’, পেটের দায়ে পুজোতে সুখ খুঁজছেন হাফিজুলরা]

‘আয় রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে’-র অন্তরা চৌধুরীকে মনে পড়ে? পুজো আসার আগে মা এই গানটা শুনিয়ে ঘুম পাড়াতেন, মনে পড়ে। মহালয়ার ভোরে বাবামায়ের মাঝে ঘুমাতাম আমি। বাবা উঠে রেডিও চালাতেন। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই কণ্ঠ শিহরণ জাগাত। উঠোন ভরে থাকত শিউলি, পা ভিজিয়ে দিত শিশির। হঠাৎই যেন হারিয়ে গেল সেই ভোর, সেই ছোটবেলা, সেই রঙিন কাগজ মোড়ানো আলোয় মায়াময় ছোটোবেলার পুজো।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement