Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2024

মহালয়া থেকে শুরু পেটপুজো, ঢেঁকিতে কুটে তৈরি হত মুড়কি, খই-বিন্দু

খই-বিন্দু তৈরির জন্য বাড়িতে ডাক পড়ত গ্রামের পুঁটিপিসির।

Durga Puja 2024: Durga Puja memories by Amitabha Ghosh
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:October 2, 2024 9:00 pm
  • Updated:October 3, 2024 7:22 pm  

অমিতাভ ঘোষ: শারদ উৎসবের দিকে আমরা সারা বছর তাকিয়ে থাকি, প্রস্তুতিও চলে বছরভর। নতুন জামা-কাপড়, প্রসাধন, জুতো, বেড়ানো, আড্ডা, সাহিত্য– সব কিছু তোলা থাকে পুজো কদিনের জন্য। বাকি থাকল খাওয়া-দাওয়া , যেটা না হলেই চলে না। এই সময় কোন নিয়ম খাটে না। শহর অঞ্চলে প্রতিমা দেখতে বেড়িয়ে ফুচকা, ভেলপুরি, রোল, মোগলাই, চপ, কাটলেট, ঘুঘনি– কী খাওয়া হয় না, তার হিসাব পাওয়া কঠিন। বর্তমানে পুজোর(Durga Puja 2024) সময় বাড়িতে রান্নার ঝামেলাটা অনেকেই নিতে চান না। তাদের জন্য বাড়িতেই খাবার পৌঁছে দেয় বড় বড় রেস্তরাঁ। এখন আবার মোবাইলে আঙুল ছুঁইয়েই বিভিন্ন বিভিন্ন পদ আনিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে – সৌজন্যে সুইগি, জোম্যাটো। কিন্তু এসবই তো শহরের কথা। গ্রাম বাংলার পুজোর খাবারের সঙ্গে শহরের মিল নেই বললেই হয়।

একটা সময় ছিল যখন মফসসল শহর, গ্রাম সব জায়গাতেই পুজোকে কেন্দ্র করে নানান খাবার বাড়িতেই তৈরি হত। টাইম মেশিনে করে যদি ত্রিশ চল্লিশ বছর পিছনে চলে যাওয়া যায়, তাহলে পুজোর খাওয়া নিয়ে গ্রাম বাংলার আসল চিত্রটা ধরা পড়ে। সেই সময় পারিবারিক দুর্গাপুজোর সুবাদে আমাদের গ্রামে চলে যেতে হত মহালয়ার পরেই। পুজোর আয়োজনের মধ্যে মাদুর্গার পুজোর প্রস্তুতির পাশাপাশি বাড়িতে খাবার দাবার তৈরির কাজটাও ছিল। তখন থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত। বলাইকে ডেকে পাঠা, লকাইকে খবর দে ইত্যাদি। গ্রামের পুজো স্পেশাল খাবার বলতে – খই, মুড়কি, খই-বিন্দু, নারকেল নাড়ু, ছানার মিষ্টি, সিউয়ের লাড্ডু, নিমকি, আরসে, ঘুঘনি, আরও কত কি। এইসব খাবার সবাই তৈরি করতে পারত না। তবে প্রতি গ্রামেই কয়েকজন অভিজ্ঞ কারিগর থাকতেন। আমাদের বাড়ির জন্য ডাক পড়ত পুঁটিপিসির। গ্রামে ঢোকার পরেই দাদু কাউকে দিয়ে পুঁটিপিসিকে ডেকে পাঠাতেন। আমরাও এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। পুঁটিপিসি আসা মানেই নিমকি, নাড়ু তৈরির সময় থেকেই চেখে দেখার অছিলাতে আমাদের খাওয়া শুরু হত। এছাড়া রান্নাঘর থেকে লন্ঠনের আলোয় চুরি তো ছিলই।

Advertisement

শুরু হত আখের গুড়কে গরম করে খইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মুড়কি তৈরি করা দিয়ে। মায়ের মুখে শুনতাম যে গুড়টা ঠিক কতটা ফোটালে খইয়ের সঙ্গে মেশাবার মতো সঠিক ‘পাক’ হবে। সেই রহস্যটা নাকি পুঁটিপিসিরই জানা ছিল। খই-বিন্দু তৈরি করাটা ছিল বেশ মজার। খইটাকে পরিষ্কার করে ধানের খোসা ছাড়িয়ে ঢেঁকিতে কুটে আনা হত। তারপর সেই খইগুঁড়োকে সঠিক পাকের গরম গুড়ে মিশিয়ে নাড়ু বানানো হত। এরই নাম ছিল খই-বিন্দু। নারকেলের মিষ্টি , ছানার মিষ্টি পাথরের তৈরি এক বিশেষ ছাঁচে দিয়ে বানানো হত। সেই মিষ্টিগুলোতে লেখা ফুটে উঠত ‘শুভ বিজয়া’, ‘নমস্কার’ ইত্যাদি। এইভাবে প্রতিদিনই আমাদের রান্নাঘরের মাটির হাঁড়ি, টিনের কোট সব ভরে উঠত হরেক রকম মিষ্টিতে। আর নারকেল কুচি দিয়ে আমার মায়ের হাতে বানানো স্পেশাল ঘুঘনিটা তৈরি হত বিজয়া দশমীর দিন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement