Advertisement
Advertisement
Hatibagan Nabin Pally

আবোল তাবোল পাড়া এবার পুজোয় থিয়েটার পাড়া

অভিনব পরিকল্পনা বাস্তব রূপায়ণের দায়িত্ব নিয়েছেন শিল্পী রাজু সরকার।

Abol Tabol Para is Theatre Para at Hatibagan nabin pally
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:September 4, 2024 9:12 pm
  • Updated:September 4, 2024 9:30 pm  

সরোজ দরবার: কলকাতার মানচিত্রে নতুন পাড়া যোগ হয়েছিল গত বছর। সৌজন্যে হাতিবাগান নবীন পল্লী। উত্তর কলকাতার আবোল-তাবোল পাড়া সাড়া ফেলেছিল বাঙালির মনে। সেই পাড়া অবিচল থাকছে। তবে, ২০২৪-এ তা বদলে হচ্ছে থিয়েটার পাড়া। বাঙালির পেশাদারী থিয়েটারের দীর্ঘ ঐতিহ্যই এবার পুজোর বিষয়ভাবনা হয়ে উঠে আসছে নবীন পল্লীতে।

বাঙালির সংস্কৃতির দিকচিহ্ন এই পেশাদার থিয়েটার। আর তার ধারক ছিল হাতিবাগান অঞ্চল। তবে, কালের নিয়মে প্রায় সবই গিয়েছে। শনি-রবিবারে সেই থিয়েটার দেখার দর্শকের ঢল আর নেই। ‘বিশ্বরূপা’ বহুতল, ‘রঙমহল’ এখন শপিংমল। অতীত স্মৃতি বুকে জড়িয়ে কোনক্রমে টিকে আছে ‘সারকারিনা’। বাঙালির ইতিহাসের একটা অংশই যেন চলে গেছে স্মৃতির অতলে। তারই পুনরুদ্ধার এবারের পুজোয়। মূল উদ্যোক্তা দীপ্ত ঘোষ জানালেন, “পুজোর সঙ্গে পাড়ার আত্মিক যোগ। সেই যোগাযোগ থেকেই আবোল-তাবোল পাড়া এবার থিয়েটার পাড়া। হাতিবাগান অঞ্চলের আত্মপরিচয় এই পেশাদার থিয়েটার। ১৮৭২-এ ‘নীলদর্পণ’ নাটকের অভিনয় থেকে সূচনা ধরলে, এই ইতিহাস দেড়শো বছর পেরিয়েছে। কত বরেণ্য মানুষ তাঁদের মেধা মননে সমৃদ্ধ করেছেন থিয়েটার শিল্পকে। বাঙালির যে সংস্কৃতি-গৌরব তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আছে থিয়েটার। অথচ, আক্ষেপের বিষয় যে, আমরা কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। পুজো যেহেতু মানুষের সঙ্গে সেতুবন্ধনের বৃহত্তর মাধ্যম, তাই পুজোর মাধ্যমেই সেই স্মৃতি এবং ইতিহাস আমরা জাগিয়ে তুলতে চাইছি।”

Advertisement
Durga Pujo 2024: Abol Tabol Para is Theatre Para at Hatibagan nabin pally
হাতিবাগান নবীন পল্লীর সাংবাদিক সম্মেলন।

[আরও পড়ুন: এবার পুজোয় পাড়ি দিন ২০৫০ সালের কলকাতায়, দেখা মিলবে ঘূর্ণায়মাণ মণ্ডপের]

ভাবনার গভীরতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে রূপায়ণের পরিকল্পনাও বহুস্তরীয়। প্রায় এক বছর ধরে চলেছে গবেষণার কাজ। এগিয়ে এসেছেন থিয়েটারের সংগ্রাহক প্রবীণ দেব। ইতিহাসের বহু অবিস্মরণীয় মুহূর্ত তাঁর সংগ্রহে। সেই ভাণ্ডার উজাড় করে দিয়েছেন এই পুজোয়। আলোক নির্দেশনার দায়িত্ব নিয়েছেন শ্যামল দাস। কিংবদন্তি তাপস সেনের কাছে তাঁর হাতেখড়ি। আলোর জাদুকরকে যেমন শ্রদ্ধা জানানো হবে, তেমনই থিয়েটারের আলোর যে শিল্প তাও উঠে আসছে এবারের পুজোয়। অতীতের সেই উজ্জ্বল দিনে যাঁদের নাম ফিরত মানুষের মুখে মুখে, তাঁদের স্মৃতি নতুন আঙ্গিকে ফিরবে এবারের পুজোয়। সেই সঙ্গে উদ্যোক্তারা পাড়ার যে কমিউনিটি বোধ, তা বজায় রাখতে চাইছেন। আর তাই পুজোর দিনগুলোয় পাড়ার মহিলারাই অংশ নেবেন লাইভ পারফরমেন্সে। অবশ্যই তার সঙ্গে যোগ থাকবে থিয়েটারের ঐতিহ্যের।

 

[আরও পড়ুন: লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ, শ্রীরামপুরে নজর কাড়বে বড় বাজেটের পুজো]

এই পুরো পরিকল্পনা বাস্তব রূপায়ণের দায়িত্ব নিয়েছেন শিল্পী রাজু সরকার। তিনি বললেন, “আবোল-তাবোল-এর সাফল্যের পর, নবীন পল্লীর পুজোকে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তোলা আমার কাছেও চ্যালেঞ্জ। পেশাদার থিয়েটারের সঙ্গে হাতিবাগান অঞ্চলের যে ঐতিহাসিক যোগাযোগ, তা বাঙালিরও নিজস্ব সম্পদ। এখন যার অনেকটাই হারিয়ে গেছে। সেই সময়কেকে জীবন্ত করে তোলাই মূল কাজ। গবেষণার সূত্রে আমরা বহু দুর্লভ জিনিস পেয়েছি। ইতিহাসের সূত্র ধরে অতীতের সেই প্রাণচঞ্চলতাই থাকবে পুজোয়।” প্রতিমার নির্মাণেও থাকবে থিয়েটারের আভাস।

পুজো বহমানতার চিহ্ন। তবে পেশাদার থিয়েটার পূর্ণচ্ছেদের মুখে। ইতিহাস আছে, তবে সে ধারা আর বইছে না নতুন খাতে। নতুন প্রজন্ম যদি তার সঙ্গে পরিচিত হয় এবং এই ঐতিহ্য সংরক্ষণে আগ্রহী হয়, তবে তার থেকে ভালো আর কিছু হয় না। পুজোর থিমে সেই বার্তাই নিহিত হাতিবাগান নবীন পল্লীতে।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement