Advertisement
Advertisement
Mahalaya 2023

Mahalaya 2023: বদলে যাচ্ছে মহালয়ার ভোর, এখন ইউটিউবেই বাজছে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর শ্লোক

পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিস্মৃতপ্রায় রেডিও!

Mahalaya 2023: Gen Y is more habituated to listen Mahisasurmaradini in YouTube Channel rather than radio | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 13, 2023 2:33 pm
  • Updated:October 13, 2023 6:45 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: “আশ্বিণের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির/ ধরণীর বহিরাকাশে অন্তর্হিত মেঘমালা/ প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমনবার্তা/ আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি…।” মহালয়ার (Mahalaya 2023) ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের এই শ্লোক পাঠ আজও বেজে ওঠে ঘরে ঘরে। শুধু মাধ্যমটুকুই বদলে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়া (Purulia) শহর এমনকি গ্রামাঞ্চলেও ঘরে ঘরে রেডিওতে বাজে না মহিষাসুরমর্দিনী। এখন মোবাইলেই রেডিও, ইউটিউব এবং টিভিতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই শ্লোক শোনে আমবাঙালি।

Purulia
ছবি: সুনীতা সিং।

কিন্তু রেডিওগুলোর (Radio)সব হলো কী? পুরুলিয়াতেও যে মহালয়ার সাতদিন আগে থেকে রেডিও-টিভি মেরামত করার দোকানগুলিতে রীতিমতো থাকে থাকে লেগে থাকতো এই বেতার যন্ত্র। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় রেডিওতে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়তেন বাড়ির বয়স্করা। কিন্তু এখন সেই দিন গিয়েছে। মহালয়ার আগের রাত থেকে ইউটিউব (YouTube) চালিয়ে ওই শ্লোক, সেই সঙ্গে গান শুনতে থাকেন প্রায় সবাই। যা হয়তো ভোর পর্যন্ত চলে। তবে এই জেলার গ্রামাঞ্চলে কিছু ব্যতিক্রম আছে। যা কার্যত হাতে গোনার মতই বিষয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগ-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা, মুখ্যমন্ত্রীকে কফির আমন্ত্রণ রাজ্যপালের]

অতীতের মহালয়ার ভোরের সেই স্মৃতিচারণ করছিলেন শহর পুরুলিয়ার নডিহার বাসিন্দা তথা অবসরপ্রাপ্ত মাস কমিউনিকেশন অফিসার প্রায় ৮০ ছুঁই ছুই নির্মলেন্দু সাহা। তিনি বলেন, “মহালয়ার সাতদিন আগে থেকে যেন প্রস্তুতি শুরু হতো বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ওই শ্লোক কখন শোনা যাবে। আমরা কতবার যে মহালয়ার আগে রেডিও মেরামত (repair) করতে দিয়েছি, তার হিসাব নেই। কিন্তু বাড়ির রেডিওটা যে কোথায় চলে গিয়েছে সেটা এখন আর জানি না। প্রায় ১৫ বছর ধরে ওই রেডিওর কালচার ত্যাগ করা হয়েছে। এখন সবাই মোবাইলেই (Mobile) মহালয়া শোনেন।”

কিন্তু ব্যতিক্রম যে খানিকটা রয়েছে। এই জেলার জঙ্গলমহল আড়শার তুম্বা, ঝালদার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুলের শিক্ষক মধুসূদন মাহাতো এখনও রেডিওর পোকা। বর্তমান প্রজন্ম যেমন মোবাইল ছাড়া চলতে পারে না, শোয়ার সময়ও হাতের কাছে প্রয়োজন হয় মোবাইলের। এই অবসরপ্রাপ্ত মানুষটিও শুয়ে শুয়ে রেডিওর নব ঘোরান। মহালয়ার দু-তিনদিন আগে থেকে রেডিও যেন ভালোভাবে ঝাড়পোঁচ করে নিচ্ছেন এই শিক্ষক মানুষটি। তাঁর কথায়, “আজও আমি রেডিওতেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়া শুনি। ওই শ্লোক পাঠ শুনে আজও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে – যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নম:….।”

[আরও পড়ুন: ‘শত্রু’ পাকিস্তানিদের এত অভ্যর্থনা কেন? জয় শাহকে বিঁধে ভারত-পাক ম্যাচ বয়কটের ডাক নেটিজেনদের]

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মহালয়ার আগের রাত থেকে অতীতের ধারাকে বয়ে নিয়ে যেতে ইউটিউবে হাতড়াতে থাকে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়ার শ্লোকের লিরিক। যা পুজোর আগে পোশাকের মতই যেন ফ্যাশন! আসলে রেডিওর দিন যবে থেকে গিয়েছে কিছুটা হলেও মহালয়ার ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী আবেগে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে এই জেলায়।

[আরও পড়ুন: পুজোর আগেই রাজ্যে বহু প্যারা টিচার ও আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়]

শুয়ে শুয়ে মোবাইলে চোখ রেখে রাত জাগা টিন-এজাররা আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের শ্লোক শুনে ঘুম থেকে ওঠে না। দেড় দশক আগেও কিন্তু গুরুজনরা মহালয়ার ভোরে রেডিও চালিয়ে দিলেই আর কেউ শুয়ে থাকতেন না। এখন অবশ্য মহালয়ায় ঘুম ভাঙে। তবে বেশ খানিকটা সকালে বাজির শব্দে। এভাবেই যেন বদলে যাচ্ছে মহালয়ার ভোর। শুধু ওই রেডিওটা না থাকায়। তাই শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে রেডিও মেরামত করার দোকানগুলোর। শহর পুরুলিয়ার বরাকর রোড, নডিহা, ভাটবাঁধ, চাইবাসা রোডের বিখ্যাত ট্রানজিস্টার হাউস। আর যে কেউ আসে না রেডিও নিয়ে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement