বেশি কথা বলা তাঁর স্বভাব নয়। নিজের ঢাক নিজে পেটানোয় বিশ্বাসী নন। যে কারণে বহুবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয়েছে মনমোহন সিংকে।
কেউ তাঁকে বলেন দেশের সবচেয়ে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী। কেউ বলেন মৌনমোহন, কেউ বলেন মৌনীমোহন।
তবে 'নীরব' মনমোহনও নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন যা একই সঙ্গে তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রতীক এবং ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।
সালটা ২০১১। একের পর এক দুর্নীতিতে বিদ্ধ মনোমোহন সরকার। সংসদে তাঁকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী সুষমা সরকার। সুষমাকে শায়েরিতে জবাব দিয়েছিলেন মনমোহন। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, 'হাজারো জবাবো সে আচ্ছি হে মেরি খামোশি, না জানে কিতনে সওয়ালো কি আবরু রখি হ্যায়।'
১৯৯১। আর্থিক উদারীকরণের সম্মুখে ভারত। সংসদে সেই বিল পেশের আগে মনমোহনের ঐতিহাসিক মন্তব্য, "সময়ের দাবিতে যে উদ্ভাবনী শক্তির জন্ম হয়, তাকে কোনও শক্তিই আটকে রাখতে পারে না।"
২০১৪। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেষ পর্যায়ে মনোমোহন সিং। বিরোধীরা তাঁকে দেশের দুর্বলতম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেগে দিয়েছেন। সসময় সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বললেন, 'আমি বিশ্বাস করি আমি দুর্বল প্রধানমন্ত্রী নই। সমসাময়িক সংবাদমাধ্যম এবং বিরোধীদের থেকে ইতিহাস আমার প্রতি বেশি সদয় হবে'
২০১৬ সালে নোটবন্দির প্রবল সমালোচনা করেছিলেন তিনি। নোটবন্দির ২ বছর পর এসে ফের বলেন, "সময় সব ঠিক করে। কিন্তু নোটবন্দির ক্ষত সময়ের সঙ্গে আরও গভীর হবে।" সেটা আজও প্রমাণিত।
২০১১ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রিত্বের মাঝপথে এসে তিনি আচমকই স্বীকার করেন, 'আমিই প্রথম ব্যক্তি হিসাবে মনে করি, আমাদের আরও ভালো কাজ করা উচিত ছিল।'
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.