Advertisement
Advertisement

Breaking News

North Sentinel Island

সভ্য সমাজ থেকে বহু দূরে, নেই পোশাকআশাক, বছরের পর বছর এভাবেই বেঁচে আন্দামানের সেন্টিনেলিজরা

ভারতীয় আইন চলে না এই দ্বীপে।

বঙ্গোপসাগরের বুকে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ। তারই মধ্যে অন্যতম হল উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ। চারদিক সমুদ্রে ঘেরা এই দ্বীপের বাসিন্দাদের 'সেন্টিনেলিজ' নামে ডাকা হয়।

তবে এই দ্বীপের ভিতরে কী রয়েছে, গোটা পৃথিবীর কাছে তা এখনও অজানা। কারণ তথাকথিত সভ্য সমাজের থেকে নিজেদের বরাবর সরিয়ে রেখেছে সেন্টিনেলিজরা। বাইরের মানুষকে এই দ্বীপের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হয় না।

রহস্যময় এই দ্বীপের টানে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছে। সেন্টিনেলিজদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে দ্বীপের মধ্যে ঢুকতে চেয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। বহির্জগতের থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রেখেই খুশি সেন্টিনেলিজরা।

প্রশ্ন ওঠে, কেন সাধারণ সেন্টিনেলিজদের উপরে বল প্রয়োগ করে ওই দ্বীপে ঢোকা যায় না? জানা যায়, আত্মরক্ষায় লোহার তৈরি তীর ব্যবহার করে সেন্টিনেলিজরা। সেই তীরের ফলায় বিষ মাখানো থাকে। সেই তীরের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।

বহু প্রচেষ্টার পরে সেন্টিনেলিজদের সামান্য কিছু ছবি পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায়, দক্ষিণ ভারতীয়দের মতোই কৃষ্ণাঙ্গ তারা। সেই সঙ্গে উচ্চতা বেশ খাটো। মনে করা হয়, বৈচিত্র্যের অভাবেই সেন্টিনেলিজদের শারীরিক গড়ন এরকম হয়েছে। বাইরের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছে সেন্টিনেল দ্বীপের মানুষ।

সম্পূর্ণ নিজের ভাষায় কথা বলেন সেন্টিনেলিজরা। এমনকি, আন্দামানের অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষও তাদের কথা বুঝতে পারেন না। সেই কারণেই বাকি পৃথিবীর মানুষ সেন্টিনেলিজদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না।

আন্দাজ করা যায়, প্রায় ৫০০ জন মানুষ বসবাস করেন সেন্টিনেল দ্বীপে। বিমানের সাহায্যে দ্বীপের ভিতরের কিছু ছবি তোলা সম্ভব হলেও, এই কাজ মোটেও পছন্দ হয়নি সেন্টিনেলিজদের।

বাইরের জগতের মানুষ এসে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করুক, তা মোটেও পছন্দ করে না সেন্টিনেলিজরা। ২০১৮ সালে মার্কিন মিশনারি জন অ্যালেন চাও ওই দ্বীপে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর আচরণ পছন্দ না হওয়ায় তাঁকে হত্যা করে সেন্টিনেলিজরা।

কাগজে কলমে ভারতেরই অংশ সেন্টিনেল দ্বীপ। কিন্তু তাদের মাটিতে চলে না ভারতীয় আইন। জনগণনার সময়ে কিছু আধিকারিক সেখানে যান, কিন্তু দ্বীপে ঢোকার অনুমতি নেই তাঁদেরও। সরকারি সাহায্য নিতেও বরাবর অস্বীকার করেছে তারা। তবে অন্য কোনও জায়গা থেকে মানুষ এলে দ্বীপের বাইরে তাদের সঙ্গে বেশ ভাল ব্যবহার করে সেন্টিনেলিজরা। নারকেল উপহার পেতে বেশ ভালবাসে তারা।