আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে উত্তাল গোটা রাজ্য। প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠেছে মশালের মতো।
আগুন বুকে নিয়েই ১৪ আগস্ট মেয়েদের ‘রাত দখল’ অভিযান। স্বাধীনতা দিবসের আগেই রাজ্যজুড়ে রাত দখলে শামিল হয়েছেন মহিলারা। আট থেকে আশি, প্রতিবাদে নেমেছেন সকলেই।
আর জি কর হাসপাতালে ঘটনার পর অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ নাকি বলেছিলেন, “অত রাতে মেয়েটির একা থাকা ঠিক হয়নি।” এতেই শোরগোল পড়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, কেন আজও নারীরা সকাল-সন্ধে হোক বা রাত, নির্দ্ধিধায় পথেঘাটে বেরতে পারবে না?
রাতে স্বাধীন বিচারণের অধিকার কি শুধু পুরুষের হাতে? সেই প্রেক্ষিতেই নারীদের রাত দখল করার এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে পোস্টার। ১৪ আগস্ট রাতে দলে-দলে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন মেয়েরা।
কলকাতার একাধিক এলাকায় রাত দখলে একজোট হয়েছেন মহিলারা। তাঁদের দাবি, তরুণী চিকিৎসকের বিচার চাই। রাতে অবাধে চলাফেরার নিরাপত্তা চাই।
কেবল কলকাতা নয়। রাত দখল অভিযান ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও। পথে নেমেছেন দুর্গাপুর, আসানসোল, জলপাইগুড়ির মহিলারা।
দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিলেতেও পৌঁছেছে প্রতিবাদের ঢেউ। ভারতীয় সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজেও শুরু হয়েছে রাত দখল।
মহিলাদের রাত দখলের কর্মসূচিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বুধবার নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন ডিজি রাজীব কুমার। সমস্ত জায়গায় কর্মসূচি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সেটা নিশ্চিত করতে নজরদারি চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিজির তরফে।
আর জি কর কাণ্ডে আজ রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। যার জেরে ওপিডি পরিষেবা কার্যত শিকেয়।
দেশ স্বাধীনতার ৭৭ বছর পার। বছর ঘুরে আবারও স্বাধীন দেশের জন্মদিন পালন। কিন্তু ভূ-ভারত স্বাধীন হলেও নারীদের সামাজিক অবস্থান কোথায় দাঁড়িয়ে? প্রশ্ন তুলে দিল এই রাত দখলের অভিযান।
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.