বুধবার স্বর্ণবেশে সাজলেন জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা। যে সাজপোশাককে সেখানকার চলিত ভাষায় 'সুনা বেশা' বলা হয়।
আট দিনের মাথায় গুন্ডিচা মন্দির থেকে নিজভূম পুরীর উদ্দেশে রওনা দেন প্রভু জগন্নাথ। সবে মাসির বাড়ি থেকে ফিরেছেন তিন ভাইবোন। প্রথা অনুযায়ী, মন্দিরে প্রবেশ করানোর আগে স্বর্ণ অলঙ্কারে সাজানো হয় জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে।
সাধারণত ২০০ কেজি সোনার অলঙ্কার ব্যবহৃত হয় এই স্বর্ণবেশ ধারণের জন্য। যে সাজপোশাককে অনেকে রাজাধিরাজও বলে থাকেন।
আষাঢ় মাসের দ্বাদশ শুক্লপক্ষের দিন, গুণ্ডিচা থেকে পুরীর মন্দিরে ফেরার পর জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে সোনার গয়নায় সাজানো হয়।
উলটো রথের দিন মন্দিরে ফিরেও তিন দিন রথেই থাকেন জগন্নাথ দেব। চলে 'স্বর্ণবেশ', 'অধরা পানা' এবং 'নীলাদ্রি ভেজ' উৎসব।
কথিত রয়েছে, রাজা কপিলেন্দ্র দেব প্রতিবেশী রাজ্য জয় করে ১৬টি হাতি বোঝাই করে এই বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না নিয়ে এসেছিলেন। জানা যায়, ১৪৬০ সাল নাগাদ মন্দিরে সেই সমস্ত মূল্যবান ধনরত্ন তিনি দান করে দেন ঈশ্বর সেবায়। সেই থেকেই প্রতিবছর জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রাকে স্বর্ণবেশে সাজানোর রীতি রয়েছে।
যা কিনা জগন্নাথভূমে আজও পালিত হয় সাড়ম্বরে। এদিনও পুরীর মন্দির চত্বরে উপচে পড়ে পূন্যার্থীদের ভিড়। পরে আবার কার্তিক, পৌষ, ফাল্গুনের পূর্ণিমা তিথিতে সোনার বেশে সাজেন প্রভু।
অধরপনা: সুনা বেশের পরের দিন দ্বাদশীর দিন হয় অধরপনা উৎসব। কী এই অধরপনা? এই রীতি অনুযায়ী দ্বাদশীর দিন সন্ধ্যা বেলায় জগন্নাথদেবকে সরবত খাওয়ানো হয়।
তারপর পালিত হয় রসগোল্লা উৎসব। ত্রয়োদশীর দিন পালন করা হয় এই উৎসব। জগন্নাথ দেবকে কয়েকশো হাঁড়ির রসগোল্লা ও ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তিনদিনের ‘সাজা’। তৃতীয় দিনেই মূল রত্নবেদীতে তোলা হয় বলরাম, জগন্নাথ, সুভদ্রাকে। (ছবি- এক্স হ্যান্ডেল)
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.