Advertisement
Advertisement
SSC Scam

নিয়োগ দুর্নীতিতে কামিনী-কাঞ্চন যোগ! রাঘব বোয়ালদের নেপথ্যে রহস্যময়ীরাও

চেনেন তাঁদের?

নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে তোলপাড়া রাজ্য। একদিকে চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে আন্দোলন চালাচ্ছে চাকরিপ্রার্থীরা। তো অন্যদিকে নিয়োগে একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। নাম জড়াচ্ছে রাঘব বোয়ালদের। শুধু নামী-দামি নেতা-মন্ত্রী বা প্রভাবশালীরা নয়, সামনে এসেছে তাঁদের একের পর এক লাস্যময়ী সঙ্গীর নাম। নজর কেড়েছে সেই সমস্ত রহস্যময়ীদের জীবনযাত্রা।

লাস্যময়ী রহস্যসঙ্গীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সঙ্গী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম। অর্পিতার দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি। সেখান থেকে নগদের পাশাপাশি প্রচুর চাঞ্চল্যকর নথিও উদ্ধার হয়। যেখানে থেকে দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে। মোট ১০৩ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে 'অপা'র। এমনকী, তাঁদের ফ্ল্যাট থেকে নগদ উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। সোনা উদ্ধার হয়েছে পাঁচ কোটি ৮ লক্ষ টাকার।

তদন্ত এগোতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যানারে আসে আরেক রহস্যময়ী নারী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি নাকি দুর্নীতি কাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত গোপাল দলপতির স্ত্রী। গোপাল ও হৈমন্তীর নাম উঠে আসার পর তাঁদের সংস্থা ও কার্যকলাপ সম্পর্কে খতিয়ে দেখছে পুলিশও। কলকাতার আগেও মডেল-অভিনেত্রী হৈমন্তী যে বেঙ্গালুরুতে একটি সংস্থার অধিকর্তা ছিলেন, তার প্রমাণ মেলে। অভিযোগ, হৈমন্তীর সংস্থাগুলির মাধ‌্যমেই টাকা পাচার করতেন গোপাল।

এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বিউটি পার্লারের মালিক সোমা চক্রবর্তীর নাম উঠে আসে। তিনি কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। সোমা একজন ব্যবসায়ী। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সল্টলেক সেক্টর ২ ওনার স্যালোঁ রয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কুন্তলের 'বান্ধবী'র নামও উঠে আসে।

হুগলি থেকে গ্রেপ্তার হন নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের আরেক পাণ্ডা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তির খতিয়ান দেখে চক্ষু চড়কগাছ আমজনতার। তাঁর নামে রয়েছে বুটিক, প্রোমোটিংয়ের মতো একাধিক অংশীদারী ব্যবসা। বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালকিনও তিনি।

তদন্ত আরও এগোতেই গ্রেপ্তার হন শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। তাঁর বিপুল সম্পত্তির হদিশের পাশাপাশি উঠে আসে বান্ধবী শ্বেতার নাম। সম্প্রতি অয়ন ‘কব্বাডি কব্বাডি’ নামে একটি বাংলা সিনেমার প্রযোজনা করেন। ওই ছবিতে ছোট একটি ভূমিকায় অভিনয় করেন শ্বেতা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও দুজনকে সঙ্গে দেখা যেত। দীর্ঘদিন মডেল জগতের সঙ্গে যুক্ত নৈহাটির এই তরুণী। ২০১৭ সালে অয়নের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। অয়নের প্রোমাটিং ব্যবসার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন শ্বেতা। কামারহাটি পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদেও চাকরি করেছেন তিনি।

শুধু শ্বেতা নয়, খোঁজ মিলেছে আরও এক রহস্যময়ীর। হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ইমন গঙ্গোপাধ‌্যায়। ওই যুবতী অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক শীলের বান্ধবী বলেই দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। ইডির মতে, অভিষেক ও ইমনের যৌথ সংস্থা এবং পেট্রোল পাম্পের মাধ‌্যমে এসএসসি ও পুর নিয়োগ দুর্নীতির কয়েক কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। তার জন‌্য অয়ন শীলের নির্দেশে রীতিমতো দক্ষিণ কলকাতার বন্ডেল রোডে অফিস খুলেছিলেন অভিষেক ও তাঁর বান্ধবী ইমন। যদিও অফিস মূলত বন্ধই থাকত। শুধু কিছু চিঠি আসত ওই ঠিকানায়।

শুধু অর্পিত-হৈমন্তী-সোমা-শ্বেতা নয়, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত আরও এগোলে আর কোন কোন লাস্যময়ীর নাম উঠে আসে, সেটাই এখন দেখার।