প্রতীকী ছবি
বাজারে তো বিমা পলিসির অভাব নেই। কিন্তু এত কিছুর মধ্যে কোনটা আপনার শিশুসন্তানের জন্য সঠিক বাছাই হবে? বৃথা তাড়াহুড়ো করে, অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নেবেন না। বরং পরামর্শ গ্রহণ করুন বিশেষজ্ঞের। গাইড করছেন বিমা উপদেষ্টা শঙ্খদীপ দাস
বিনিয়োগ হোক বা সঞ্চয়, আমানতকারীর প্রাথমিক চাহিদা থাকে–কত টাকা দিয়ে কত টাকা পাব। স্বল্পমেয়াদি হোক বা দীর্ঘমেয়াদি। কখনও নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য বা কখনও পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যতের জন্য। ভারতবর্ষে বিনিয়োগের একটা বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে সরকারি সংস্থার সঞ্চয় প্রকল্পগুলি। আর এই পরিস্থিতির কথা ভেবে ভারতীয় জীবন বীমা নিগম (এলআইসি) এক দীর্ঘমেয়াদি নিশ্চিতভাবে ফেরতযোগ্য (পূর্বনির্ধারিত নির্দিষ্ট অর্থ) প্রকল্প বাজারে নিয়ে এসেছে। প্রকল্পটির নাম অমৃতবাল (প্ল্যান নং -৭৭৪)।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যও ভীষণভাবে সুনির্দিষ্ট। পরবর্তী প্রজন্মের উচ্চশিক্ষা, বিবাহ বা ব্যবসায়িক মূলধন সুনিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য। প্রথমে প্রকল্পটির আর্থিক মূল্যায়ন করা যাক। (এই লেখার প্রথম শর্ত বিচার করে)। এখানে নিশ্চিত ফেরতযোগ্য অর্থের পরিমাণ হল প্রকল্পের বিমারাশি এবং তার উপর বার্ষিক ৮ শতাংশ মূল্য এবং সেটা প্রকল্পের মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে প্রিমিয়াম দেওয়ার সময় কোনওভাবেই বিচার্য নয়। এই অর্থ শর্তসাপেক্ষে সম্পূর্ণ করমুক্ত। বর্তমান সঞ্চয় প্রকল্পগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এই বার্ষিক ৮ শতাংশ অর্থ বেশ আকর্ষণীয়।
প্রকল্পটিতে একসঙ্গে প্রিমিয়াম দিয়ে দেওয়া সম্ভব এবং সেখানে প্রদেয় প্রিমিয়ামের মূল্যও অনেক কম। আবার ৫,৬,৭ বছর নির্দিষ্ট মেয়াদেও প্রিমিয়াম দেওয়া যায়। যার যে রকম সুবিধা। প্রকল্পটি বাচ্চার একমাস বয়সের পর থেকে ১৩ বছর বয়েস পর্যন্ত নেওয়া যাবে এবং বাচ্চার ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা সময়ের একটি নির্দিষ্ট বছরে নেওয়া যাবে। এই ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রচুর স্বাধীনতা আমানতকারী উপভোগ করতে পারেন। পূর্বনির্ধারিত অর্থ একসঙ্গে ফেরত নিতে পারেন অথবা ৫, ১০, ১৫ যে কোনও একটি ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয় হিসাবেও নেওয়া যাবে। এই ক্ষেত্রে মোট প্রদেয় অর্থের পরিমাণও অনেক বেশী পাওয়া যায়। এই ধরনের ফেরতযোগ্য বিকল্প পদ্ধতি বাচ্চার ভবিষৎ এর অনেক রকমের প্রয়োজনীয়তাকে পূরণ করে।
বাচ্চার জীবনবিমা নিয়ে আমাদের খুব একটা উৎকণ্ঠা থাকার কথা নয় (যদিও এই প্রকল্পে সেই ব্যবস্থা আছে)। তবে আমাদের উদ্বেগের প্রধান এবং প্রাথমিক কারণ বাচ্চার বাবা বা মায়ের জীবন বিমা, যিনি এই প্রকল্পে অর্থ দেবেন। সামান্য কিছু প্রিমিয়াম দিয়ে (প্রিমিয়াম ওয়েভার বেনিফিট রাইডার ) বাচ্চার ভবিষ্যতের আর্থিক সুরক্ষাকে নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রিমিয়াম প্রদানের মেয়াদ পর্যন্ত বাবা বা মায়ের (যিনি প্রিমিয়াম দেবেন) আকস্মিক মৃত্যুজনিত চরম ক্ষতি যদি হয় (যা বিমার আসল উদ্দেশ্য) তাহলে আর প্রিমিয়াম দিতে হবে না, কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে পূর্বনির্ধারিত অর্থ বাচ্চার ভবিষৎ সুরক্ষিত করবে।
প্রকল্পটিতে আরও কিছু সুযোগসুবিধা প্রদান করা হয়েছে। যেমন উচ্চ বিমারাশির প্রিমিয়ামে বিশেষ আর্থিক ছাড় যেখানে মোট প্রদেয় প্রিমিয়াম কম হয়ে যাবে।
হঠাৎ অর্থের প্রয়োজন হলে প্রকল্পটি থেকে অগ্রিম টাকা (লোন) নেওয়া যাবে। এই বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন প্রকল্পটি সঞ্চয়ের বাজারে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তা প্রমাণিত। আমানতকারীর সুবিধার্থে নিচে একটি বিষয়বস্তুর সারণী দেওয়া হয়েছে।
১. বাচ্চার বয়স – ০ বছর
২. বাবা/মা এর বয়স – ৩০ বছর
৩. বিমারাশি- ১০ লক্ষ টাকা
৪. ম্যাচুরিটি- ১৮ বছর (বাচ্চার বয়স )
৫. বার্ষিক প্রিমিয়াম – ২,১৩,১৪৬ টাকা (জিএসটি ছাড়া )
৬. অর্থ – ২,৪৪,০০০,০ টাকা।
এই অর্থ যদি ৫ বছর ধরে নেওয়া হয় (বাচ্চার ১৮ বছর থেকে ২২ বছর পর্যন্ত প্রতি বছর) তাহলে বার্ষিক ৫,৩৫,১৮৫ টাকা করে পাওয়া যাবে।
ক. যদি এই প্রিমিয়াম একসঙ্গে একবারে দেওয়া হয় তাহলে মোট প্রদেয় প্রিমিয়াম এর পরিমান ৮,৫২,৪০০ টাকা।
খ. এলআইসি-এর এই ‘অমৃতবাল’ প্রকল্পটি যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক এবং সময়পযোগী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.