সিপ মানে সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান। লগ্নির সুফল পেতে সিপ করার পরামর্শ প্রায় সব বিশেষজ্ঞই দেন। কিন্তু সময় যত এগোচ্ছে, বিনিয়োগের ধরণ-ধারণও বদলাচ্ছে, বলা ভাল আরও উন্নত হয়েছে। নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী আধুনিক বিনিয়োগ পদ্ধতি হিসাবে এবার উঠে আসছে ‘নিউ–জেন সিপ’-এর নাম। ‘নিউ জেনারেশন’-এর জন্য ‘নিউ-জেন সিপ’। আগের থেকে কতটা আলাদা এই সিপ? কী কী তার নতুন বৈশিষ্ট্য? খুঁটিনাটি জানালেন নীলাঞ্জন দে
সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে সাবেক ধারণা তো ইতিমধ্যেই ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। মার্কেটে যাই হোক না কেন, ভ্যালুয়েশন বাড়ুক বা কমুক, আপনি একইভাবে একই পরিমাণ টাকা সিস্টেম্যাটিক পদ্ধতিতে লগ্নি করে যাবেন-এমন ভুল ধারণা নিয়ে চলার ইচ্ছা আর আপনার হয়তো নেই। তাই আজ একটু অন্য পন্থা অবলম্বন করতে জোর সওয়াল করছি। ধরা যাক, এই পন্থা’র নাম ‘নিউ-জেন সিপ’ (New-gen SIP)। নতুন প্রজন্মের তথা নতুন ইনভেস্টর-এর মাধ্যমেই বিনিয়োগ করবেন আগামিদিনে।
এই পদ্ধতির মূলে আছে সামান্য এক বক্তব্য : বাজার বেড়ে গেলে সিপের পরিমাণ কমিয়ে আনুন, আর বাজার পড়লে পরিমাণ বাড়ান। সত্যিই তো, যখন দাম বাড়বে তখন কেন লগ্নি কমিয়ে আনবেন না? ন্যাভ পড়লে কেন লগ্নি বাড়াবেন না? প্রশ্নর উত্তর সহজেই পারেন একটু ভাবলে। ইদানিং এই কমানো-বাড়ানোর কৌশলের প্রতি নজর দিচ্ছেন অনেক লগ্নিকারী, তাই সনাতনী সিপ-এর প্রতি সেই আগের মতো টান আর নেই। তার বদলে এসেছে স্ট্র্যাটেজিক কয়েকটি পদ্ধতি। সার্বিকভাবে নিউ-জেন সিপ আরও বড় জায়গা করে নেবে ভবিষ্যতে, বলে ইনভেস্টরদের একাংশ বিশ্বাস করেন।
এবার চলে আসি দরকারি দু’টি কথায়। Fear of Missing Cut (FOMO)-র বশবর্তী হয়ে আমরা অনেকেই সাম্প্রতিক র্যালিতে (গত দুই বছরে বিশেষ করে) অংশগ্রহণ করেছি, নির্বিচারে লগ্নি করে গিয়েছি, ‘ভ্যালুয়েশন’ সম্পর্কে তেমন তোয়াক্কা না করে। এই অভ্যাসটা যত দ্রুত ত্যাগ করা যায় ততই ভাল। সাধারণত, লগ্নিকারীর ‘টাইমিং’ কখনওই অব্যর্থ হয় না, তিনি দেরিতে ঢুকে বড় তাড়াতাড়ি ‘এক্সিট’ করে ফেলেন প্রায়শই। এতে তাঁর পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যে ভ্যালু আশা করেছিলেন তা পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে।
নিউ-জেন স্ট্র্যাটেজির একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। সম্প্রতি স্যামকো মিউচুয়াল ফান্ডের ‘timerSTP’ খবরের শিরোনামে এসেছে। বাজার উপরে থাকলে কম, নিচে থাকলে বেশি বিনিয়োগ-এটাই এখানে মূল বক্তব্য। এই বিষয়ে স্যামকো মিউচুয়াল ফান্ডের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার শ্রী উমেশকুমার মেহতা কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। সারাংশ–
# রিটেল ইনভেস্টররা যাতে ভুল সময় বাজারে পা না রাখেন, সে ব্যাপারে তাঁরা যেন সজাগ থাকেন। তবে যথার্থ সময়টি কী, তা সর্বদা স্থির করা কার্যত অসম্ভব।
# স্যামকো ওভারনাইট ফান্ড ব্যবহার করে কৌশলী লগ্নি করা সম্ভব। যদি তাঁরা গুছিয়ে করতে পারেন, তাহলে নিয়মনীতি মেনে ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট ইকুইটি ফান্ডে ‘ট্রান্সফার’ করতে পারেন। ‘TimerSTP’-র সাহায্যে বিপদ এড়িয়ে যেতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।
এখানে ওভারনাইট ফান্ড নিয়ে কিছু কথা বলে রাখি। স্বল্পমেয়াদী ডেট নিয়ে যাঁরা উৎসাহী, তাঁরা তো জানেনই, ইদানীং এই শ্রেণির ফান্ডের ব্যবহার বেড়েছে। অবশ্য, কৌশলী ইনভেস্টর লিকুইড বা আল্ট্রা-শর্ট টার্ম ফান্ডও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
STP-র তিন রকম:
বিঃদ্রঃ- নাম শুনেই প্রতিটি পদ্ধতির অন্তর্নিহিত বক্তব্য বোঝা যাচ্ছে। নিজের প্রয়োজন বুঝে লগ্নিকারী সঠিক পন্থাটি বেছে নিতে পারেন। প্রয়োজনে পেশাদার পরামর্শদাতার সাহায্য নিতে হবে।
(লেখক বিনিয়োগ পরামর্শদাতা)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.