রুল-বেসড ইনভেস্টিং। বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় নিয়ম মেনে যে লগ্নি হয়। বলাই বাহুল্য, নিয়ম-নীতি মেনে করা যেকোনও কাজই সাফল্যের বার্তা বয়ে আনে। এই ধরনের বিনিয়োগেও এই বৈশিষ্ট্যটি রয়েছে। সঙ্গে আরও রয়েছে ভালো রিটার্ন এবং ভুল-ভ্রান্তি এড়ানোর প্রতিশ্রুতি। ঠিক এই কারণেই বিনিয়োগকারীদের একাংশ আজকাল ঝুঁকছেন এই বিশেষ স্ট্র্যাটেজির দিকে। আলোকপাত করলেন নীলাঞ্জন দে
রুল-বেসড ইনভেস্টিং নতুন নয়, তবে আজ তা নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করছেন বিনিয়োগকারীদের একাংশ। সনাতনী পদ্ধতিতে লগ্নি করে যে ভুলচুক প্রায়ই করে ফেলেন অনেকে, এ থেকে মুক্তি দিতে পারে রুল-বেসড বিনিয়োগের পন্থাগুলো। এমনই বিশ্বাস করেন বাজারের একটি অংশ।
- ‘ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস’ নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁরা কোম্পানির ফিনান্সিয়াল তথ্য ঘেঁটে, এবং আরও অন্যান্য শর্ত পরখ করে, স্টক নির্বাচন করেন। এই স্টক বাজারে ‘আন্ডার ভ্যালুড’ এবং ভবিষ্যতে রিটার্ন আনতে সক্ষম হবে, বলেই তাঁদের অভিমত। ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস পুরোনো বা সাবেকি বলে গণ্য।
- ইদানিং কিছু ফ্যাক্টর – যেমন: মোমেন্টাম বা কোয়ালিটি চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলিই রিটার্ন আনায় সাহায্য করে, তাঁরা জানাচ্ছেন। ‘মোমেন্টাম ইনভেস্টিং’ নিয়ে আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে আজকের দুনিয়ায়।
- রুল-বেসড (বা ফ্যাক্টর) ইনভেস্টিংয়ের গোড়াপত্তন এখানেই। বিরাট-আকারের তথ্য (ডেটা) ব্যবহার হচ্ছে এবং নানাভাবে লগ্নির মডেলও তৈরি হয়েছে এর ভিত্তিতে । টেকনোলজির সাহায্য নিয়ে বিনিয়োগ সহজতর হয়েছে হালে। সাইজ, মার্কেট রিস্ক, ভ্যালু, প্রফিটেবিলিটি ইত্যাদিও ফ্যাক্টর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
- রুল-বেসড ফান্ডস: কোনও ইমোশানাল বায়াস ছাড়া মডেল গঠন করা হয়, যার ভিত্তিতে লগ্নি করা হয়। পোর্টফোলিওতে নানারকম স্টক থাকেই, তবে সেগুলির নির্বাচন হয় নির্দিষ্ট রুলের উপর নির্ভর করে। বলা হয়, রুল বেসড হলে বিনিয়োগের পদ্ধতি হয়ে ওঠে খুব ‘এফিসিয়েন্ট’, তাতে ইনভেস্টরদেরই সুবিধা। আমাদের পাঠকদের জন্য একটি উদাহরণ বেছে নিয়েছি কোনও রকম পক্ষপাত ছাড়া। অর্থাৎ এখানে আমাদের কোনও রকম ‘রেকমেন্ডশন’ আদৌ নেই, কখনও থাকেও না। আমাদের উদাহরণ : 360 ONE Quant Fund।
উদ্দেশ্য:
- লং টার্ম ক্যাপিটাল গ্রোথ এনে দেওয়া।
- পোর্টফোলিওতে থাকবে ইক্যুইটি, যেগুলো নির্দিষ্টভাবে ‘কোয়ান্ট অ্যানালিসিস’ করে নির্বাচিত।
- ওপেন-এন্ড ফান্ড, তাই যে কোনও দিন ইউনিট কিনতে বা বেচতে পারেন লগ্নিকারী । তবে এক বছরের জন্য ১% এক্সিট লোড আছে।
- ফান্ডের অ্যালটমেন্ট হয়েছে নভেম্বর ২০২১ সালে
- ইনডেক্সঃ S&P BSE 200
- রিটার্নঃ প্রথম দিন থেকে ধরলে ২১.৫১%। গত ডিসেম্বরের এই সময়ে বেঞ্চমার্ক ইনডেক্স দিয়েছে ১৫.০৫%।
- কেউ যদি মাসে ১০,০০০ টাকা সিপ করে থাকেন, তাহলে এক বছরে (ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩) লগ্নির পরিমাণ ১,২০,০০০ টাকা। তার ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ১,৫৯,০২৭ টাকায়। একই সময় বেঞ্চমার্কের ভ্যালুঃ ১, ৪৪, ৪৩৫ টাকা।
- রেগুলার প্ল্যানের এক্সপেন্স রেশিও ১.৫৮%
- বড় হোল্ডিংগুলোর মধ্যে আছে:
– Power Finance Corporation
(নেট অ্যাসেটের) 3.86% – Hindustan Aeronautics 3.83%
–Indian Oil Corporation 3.60%
–REC Ltd 3.57%
–Bharat Electronics 3.44%
- প্রথম পাঁচটি সেক্টর:
ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস 26.30%
ক্যাপিটাল গুডস 18.84%
হেলথকেয়ার 9.55%
অটোমোবাইল 9.11%
ইনফোটেক 8.82%
(তথ্য : 360 ONE মিউচুয়াল ফান্ড, গত ডিসেম্বরের শেষে)