প্রতীকী ছবি
ভারতীয় বিনিয়োগকারী পাবেন অনেক নতুন সুযোগের সন্ধান। এক কথায়, অ্যামফি’র নতুন চিফ এক্সিকিউটিভ শ্রী ভেঙ্কট নাগেশ্বর চালাসানি’র বক্তব্যের সঙ্গে সহমত হবেন সব পক্ষই। অ্যাসোসিয়েশন অফ মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়া-র সর্বোচ্চ পদে অধীন প্রাক্তন ব্যাঙ্কারের সঙ্গে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নীলাঞ্জন দে। প্রশ্নোত্তরের সারাংশ।
এখন তো অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ক্ষেত্রে অনেক নতুন প্লেয়ার এসেছে। প্রতিযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
হ্যাঁ, বাজারে একাধিক নতুন নাম ইদানিং এসেছে, যা ভারতীয় অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে আনন্দের কথা। বিনিয়োগকারীর জন্য সহায়কও, কারণ নতুন বিকল্পের আবির্ভাব এই পথে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য এমন ট্রেন্ড যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে করি আমি। নবাগতরা যদি নিজেদের মান উন্নত রাখেন, নতুন রীতির সূচনা করেন তাহলে তো ভালোই হয়। ইতিমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি কীভাবে সাধারণ লগ্নিকারী সঞ্চয় করছেন মিউচুয়াল ফান্ডে। তার প্রমাণ, আমাদের মোট অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্টে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। আজ যখন আমরা এই কথা বলছি এখনই চুয়ান্ন লক্ষ কোটি টাকার বেশি পরিচালনা করছেন বিভিন্ন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাগুলো। আমাদের মেম্বাররা নিজেদের পরিসর বাড়াতে পারছেন, কারণ লগ্নিকারীরা আস্থা রাখছেন আধুনিক পদ্ধতিতে করা ইনভেস্টমেন্টের উপর, যা ফান্ড ম্যানেজররা পরিচালনা করে থাকেন। হিসাব দেখতে হবে তাঁদের। মনে রাখুন, ‘ইউনিক ফোলিও’র সংখ্যা ইদানীং কম নয়।
বিষয়টি খুব আশাব্যঞ্জক, কারণ তা ভবিষ্যতের একটি স্থায়ী ধারার প্রতি ইঙ্গিত করছে। অবশ্যই প্রযুক্তির প্রচুর সহায়তা রয়েছে, তা না হলে এত দ্রুত এমন সাফল্য পেতাম না আমরা। মিউচুয়াল ফান্ডের সাহায্যে বহু নতুন লগ্নিকারী সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারছেন ভারতীয় ক্যাপিটাল মার্কেটে। আজ, যখন ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন নিয়ে এত আগ্রহী হয়েছেন নীতি নির্ধারকরা, তখন এই বিষয়টি খুব আশাপ্রদ বৈকি। সত্যি বলতে কি, অপেক্ষাকৃত ছোট শহরে যে চিত্রটি ভেসে আসছে তা অনেক পুরনো ধারণাকে বদলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
আপনাদের ‘গ্রোথ স্টোরি’ মানলাম। সেখানে ছোট রিটেল ইনভেস্টরদের স্থান কোথায়?
রিটেল এই মুহূর্তে খুব ইতিবাচক পরিস্থিতির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে, এ কথা অবশ্যই বলা যায়। দশ বছরের পরিসংখ্যান দেখুন, সহজেই বুঝবেন। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির মোট অ্যাসেট দশ লক্ষ কোটি টাকা ছিল। দশ থেকে বিশ, অর্থাৎ দ্বিগুণ হতে লেগেছিল সাত বছর। আবার নভেম্বর ২০২০ সালে আমাদের মোট অ্যাসেটের পরিমাণ ছিল ৩০ লক্ষ কোটি। সেখান থেকে আজকের ৫৪ লক্ষ কোটি হয়ে ওঠা, আর এত দ্রুতগতিতে, ইনভেস্টরদের কল্যাণে। এঁদের একটি প্রধান অংশ রিটেল।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান যদি বিচার করেন, তাহলে মনে রাখুন-ফোলিওর সংখ্যা দিয়েও প্রসঙ্গটি বোঝানো যেতে পারে। ফেব্রুয়ারি মাসে ফোলিওর মোট সংখ্যা ছিল ১৭.৪২ কোটি। আমি ইক্যুইটি, হাইব্রিড, সলিউশন-ভিত্তিক সব প্রকল্প ধরেই বলছি। এর মুখ্য অংশ তো এসেছে রিটেল সেগমেন্ট থেকেই। আমাদের হিসাবমতো, প্রায় ১৪ কোটির কাছাকাছি এই সংখ্যাটি। একইসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, রিটেলের অবদান অনেকাংশে আসে সিপ বা সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের মাধ্যমে। কেবল ফেব্রুয়ারি মাসেই সিপ মারফৎ কালেকশন ছিল ১৯,০০০ কোটি টাকার বেশি। আট কোটির অধিক সিপ অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যে আছে সব অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট সংস্থা মিলিয়ে।
রিটেলের স্বার্থ কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন আপনারা?
নিয়ন্ত্রক সেবি’র বক্তব্য খুব স্পষ্ট। লগ্নিকারীর স্বার্থ যাতে কোনওভাবে লঙ্ঘিত না হয়, তা দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে। রিটেল, যাঁরা একেবারেই ছোট বিশেষ করে, তাঁরা নানা কারণে অনেক সময় অসুরক্ষিত আছেন, এমন ভাবনায় তাড়িত হন, দেখা যায়। তাঁদের জন্য বিশেষভাবে বলতে চাই যে, নিয়মকানুন বিঘ্নিত হওয়াকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। তবে সাধারণভাবে বলে রাখি আমাদের সদস্যরা অনেকভাবে সদর্থক বার্তা পাঠান তাঁদের গ্রাহকদের স্বার্থে অথবা তাঁদের শিক্ষার্থে। নানারকম প্রকল্প নেন ফান্ড ডিস্ট্রিবিউটাররাও–উদ্দেশ্য লগ্নিকারীর জ্ঞান বাড়িয়ে তোলা। আবার রিটেল বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় নিজেরাও এগিয়ে আসছেন এই বিষয়ে, এমনও দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন শিক্ষামলূক প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে থাকেন তাঁরা। সব মিলিয়ে এই সবের ফল আমাদের ইন্ডাস্ট্রির পক্ষেই সন্তোষজনক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.